ঈদকে সামনে রেখে সরগরম পাবনার বেনারসি পল্লী। জেলার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত বেনারসি পল্লীতে শাড়ি তৈরির পাশাপাশি শাড়িতে কারচুপির কাজ চলছে। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কয়েক হাজার শ্রমিক।
বুধবার সরেজমিন ঈশ্বরদীর ফতেমোহাম্মদপুর ও লোকোসেড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেনারসি পল্লী শ্রমিকদের কাজে মুখর। দম ফেরার ফুসরত নেই তাদের। দিনরাত চলছে শাড়ি তৈরির কাজ। জামিল নামে এক শ্রমিক জানান, বেনারসি পল্লীর শ্রমিকরা অন্য পেশা থেকে ফিরে এসেছেন। একজন বেনারসি শ্রমিক শাড়ির কাজ করে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা আয় করছে।
আরেক শ্রমিক শিপন হোসেন জানান, একটি শাড়ি তৈরি করতে ৩/৪ দিন সময় লাগে।
শ্রমিকেরা আরও জানান, ঈশ্বরদীর তৈরি বেনারসি শাড়িই মিরপুরের বলে বিক্রি করে থাকেন ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটের শাড়ি ব্যবসায়ীরা।
শাড়ি ছাড়াও ঈশ্বরদীর ফতেমোহাম্মদপুর এলাকায় এখন প্রত্যেকটি বাড়িতেই কারচুপির কাজ চলছে ধুমছে। কারোরই দম ফেলবার ফরসত নেই।
বেনারসি শ্রমিক বাবু জানান, ঈদের প্রস্তুতির কারণে এখন সপ্তাহে ২টির স্থানে তিনটি শাড়ি তৈরি করছেন বেশিরভাগ শ্রমিক। প্রতি সপ্তাহে ঈশ্বরদীতে প্রায় এক হাজার পিস শাড়ি তৈরি হচ্ছে।
বেনারসি পল্লীর একটি শাড়ি কারখানার মালিক জাবেদ জানান, কয়েক বছর আগেও ভারত-পাকিস্তান থেকে কাতান-বেনারসি চোরাই পথে বাংলাদেশে আনা হতো। এখন ঈশ্বরদীর তৈরি বেনারসি শাড়ি দেদারছে ভারত যাচ্ছে। আগের চেয়ে অনেকগুণ বেশি উন্নতমানের বেনারসি শাড়ি তৈরি হচ্ছে বলেই এখন ঈশ্বরদীতে এই শিল্পের ক্রমবিকাশ হচ্ছে। ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লীর শাড়ির চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। এখানকার তৈরি বাহারি ডিজাইনের শাড়ি কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্রেতারাও।
দুঃস্থ তাঁতীদের উন্নয়নে সরকারিভাবে ২০০৪ সালে ঈশ্বরদীর ফতেমোহাম্মদপুর এলাকায় বেনারসি পল্লী স্থাপন করা হয়। বর্তমানে ৯টি কারখানা চালু রয়েছে বেনারসি পল্লীতে। অল্প সময়ের মধ্যেই এখানকার উৎপাদিত শাড়ীর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও পাবনার বেনারসি পল্লীর শাড়ির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাবনার ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লী আধুনিকায়ন করা হলে এবং তাঁতীদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হলে এখান থেকে উৎপাদিত শাড়ি এদেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করেন বেনারসি পল্লীর সঙ্গে জড়িতরা ব্যবসায়ীরা।
/এসটি/