X
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
১৩ চৈত্র ১৪২৯

খরস্রোতা সুখদহ নদী এখন মরা খাল

মো. নাজমুল হুদা নাসিম, প্রতিনিধি
১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৩:৪৫আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৩:৪৫

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার এককালের খরস্রোতা সুখদহ নদী অনেক আগেই নাব্য হারিয়েছে। দীর্ঘদিন খনন না করা ও দখল-দূষণে নদীটি এখন মরা খাল। নদীর তীরে বসবাসকারী বিভিন্ন পেশার মানুষ অবিলম্বে নদীটি খনন করে নাব্য ফিরিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

উপজেলার ভেতর দিয়ে যমুনা, বাঙালি ও সুখদহ নদী প্রবাহিত হয়েছে। ভরা মৌসুমে যমুনা নদীতে বন্যা হয়। কিন্তু বাঙালি ও সুখদহ নদীতে বর্ষাকালে পানি থাকলেও অন্য সময় প্রায় শুকনো থাকে। উপজেলার নারচী ও ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত সুখদহ নদীতে এক সময় বড় বড় পাল তোলা নৌকায় কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন হতো। তীরবর্তী মানুষ উৎপাদিত ফসল নৌকায় তুলে আশপাশের বিভিন্ন হাট-বাজারে নিতেন। এখন এই নদী শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ফলস চাষাবাদ করা হয়। অনেক স্থান ভরাট হয়ে উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। 

অন্তত ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সুখদহ নদীর পাশের গাবতলী উপজেলার বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের বালিয়াদীঘি মৌজা থেকে শুরু হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে কিছুটা অগ্রসর হয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলায় প্রবেশ করে। এ উপজেলার উত্তর-পূর্ব দিকে কিছুটা অগ্রসর হয়ে গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা ইউনিয়নের দূর্গাহাটায় পুণরায় প্রবেশ করে। এরপর উত্তর-পশ্চিমে প্রায় দুই মাইল প্রবাহিত হয়ে আবার ফুলবাড়ি মৌজা হয়ে নারচী ইউনিয়নের নারচী পর্যন্ত গিয়ে বাঙালি নদীতে মিশেছে।

সুখদহ নদীর বিভিন্ন স্থানে ফলস চাষাবাদ করা হয়

এ নদীর তীরে নারচী ও ফুলবাড়ি জনপদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে ফুলবাড়ির কাছে নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। আগেই যৌবন হারানো সুখদহ নদীতে কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও শুকিয়ে যাওয়ায় নৌকা চলে না। কোনও কোনও এলাকায় পানি থাকলেও সেখানে জেলেরা ঘের দিয়ে মাছ চাষ করেন।

হাটফুলবাড়ি এলাকার চালকল ব্যবসায়ী মোজাফফর আহম্মেদ জানান, সুখদহ নদী কালের আবর্তে দখল-দূষণে নাব্য হারিয়ে ফেলেছে। নদীটি আবার খনন করা সম্ভব হলে এলাকার কৃষক, জেলেসহ সব পেশার মানুষের উপকার হবে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ও ফসল উৎপাদন বাড়বে।

সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বান্টু বলেন, সুখদহ নদী তার প্রকৃত চেহারা হারিয়ে ফেলেছে। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি থাকলেও অধিকাংশ এলাকা শুকিয়ে গেছে। কৃষকরা এসব স্থানে চাষাবাদ করে থাকেন।

ফুলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদ জানান, তার এলাকার একমাত্র সুখদহ নদী ছিল খরস্রোতা। নদী পারাপারে খেয়া নৌকা ছিল। পাল তুলে বড় বড় নৌকা মালামাল ও যাত্রী পরিবহন করতো। চাষিরা নদীর পানি দিয়ে চাষাবাদ করতেন। জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন এসব কিছুই নেই। নদী শুকিয়ে মরে গেছে। সেখানে কৃষকরা বিভিন্ন ফলস চাষাবাদ ও বীজতলা করছেন। দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাদের নদীটি খনন করে নাব্য ফিরিয়ে দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুর রহমান তাসকিয়া জানান, প্রথম পর্যায়ে সুখদহ নদীর উৎপত্তিস্থলে কিছু খনন করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে পুরো নদী খননের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে পুরো নদী খনন করে নাব্য ফিরিয়ে আনা হবে।

/আরকে/এসএইচ/
সম্পর্কিত
শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা নদী হঠাৎ পানিতে টইটম্বুর
বুড়িগঙ্গার কান্না শুনবে কে? (ফটোস্টোরি)
১০০টি নদীর উন্মুক্ত আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
টেকনাফে অপহৃত তিন যুবক উদ্ধার, আটক ২
টেকনাফে অপহৃত তিন যুবক উদ্ধার, আটক ২
কাভার্ডভ্যানেই সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন
কাভার্ডভ্যানেই সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন
রমজানেই সৌদি-ইরান বৈঠক
রমজানেই সৌদি-ইরান বৈঠক
লিটন-রনির ব্যাটে আগ্রাসী সূচনা
লিটন-রনির ব্যাটে আগ্রাসী সূচনা
সর্বাধিক পঠিত
স্যার না ডেকে ভাই বলায় শিক্ষকের ওপর খেপলেন সরকারি কর্মকর্তা
স্যার না ডেকে ভাই বলায় শিক্ষকের ওপর খেপলেন সরকারি কর্মকর্তা
সোমবার থেকে সরকারি অফিস ও ব্যাংক চলবে নতুন সময়সূচিতে
সোমবার থেকে সরকারি অফিস ও ব্যাংক চলবে নতুন সময়সূচিতে
চলন্ত মোটরসাইকেলে ফণা তুলে বসলো বিষধর সাপ
চলন্ত মোটরসাইকেলে ফণা তুলে বসলো বিষধর সাপ
চেকিংয়ের আগেই আনসার সদস্যকে লাথি মেরে লাগেজ নিয়ে পালিয়েছেন যাত্রী
চেকিংয়ের আগেই আনসার সদস্যকে লাথি মেরে লাগেজ নিয়ে পালিয়েছেন যাত্রী
হোটেল কক্ষে মডেলের ঝুলন্ত মরদেহ  
হোটেল কক্ষে মডেলের ঝুলন্ত মরদেহ