সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানার কনস্টেবল (কম্পিউটার অপারেটর) আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে চেক জালিয়াতির মামলায় আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে যৌতুক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলেও তাকে গ্রেফতার দেখানো (শ্যোন অ্যারেস্ট) হয়নি। এই মামলায় সোমবার (১৩ জুন) তাকে আদালতে হাজির করতে ওয়ারেন্টও ইস্যু করা আছে। তবে রবিবার তাকে বগুড়া কারাগারে নেওয়া হলেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই আসামিকে আগামীকাল আদালতে হাজির করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বাদীপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার এস এম মহিউদ্দীন হায়দার দাবি করেন, চেকের মামলায় জামিন পাওয়ায় আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে যৌতুক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো সংক্রান্ত আদালতের কোনও আদেশ বা নির্দেশ পাননি।
আদালত সূত্র জানায়, কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন জুয়েল বগুড়া শিবগঞ্জের মোকামতলা ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে। তিনি একই উপজেলার শিয়ালী মাস্টারপাড়ার মৃত ওসমান আলীর মেয়ে খাদিজা আকতারকে বিয়ে করেন। তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেন স্ত্রী। এছাড়া স্ত্রীর বড় বোন সেলিনা আকতার এই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা করেন।
যৌতুক মামলায় বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালত তাকে এক বছর পাঁচ মাস সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। আসামি পলাতক থাকায় বিচারক সঞ্চিতা ইসলাম গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সাজা পরোয়ানা জারি করেন। অপরদিকে চেক জালিয়াতির মামলায় (৪৩৭/২০ দায়রা) বগুড়ার প্রথম যুগ্ম জজ আদালত তাকে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন। পলাতক থাকায় গত ১৭ মে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ দুটি মামলার সাজা পরোয়ানামূলে আসামি আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে গ্রেফতার করে গত ৯ জুন বগুড়া কারাগারে পাঠায়। রবিবার আইনজীবী শফিকুল ইসলাম তাকে প্রথম যুগ্ম জজ তৈয়ব আলীর আদালতে হাজির করে দুই লাখ টাকা জমা দিয়ে জামিন প্রার্থনা করলে তা মঞ্জুর করা হয়। যৌতুক মামলায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা সাজাপ্রাপ্ত আসামি জুয়েলকে গ্রেফতার দেখাতে ও ১৩ জুন আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। আদালতের এ আদেশ বগুড়া জেলখানায় পৌঁছে দেওয়া হয়। এ ছাড়া আদালতের কর্মচারীরা বিষয়টি ফোনে জানিয়েছেন।
দুই মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী সাদিক ওয়াসিক বাঁধন দাবি করেন, আসামি চেকের মামলায় জামিন লাভ করেছেন। যৌতুক মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে শ্যোন অ্যারেস্ট ইস্যু ও সোমবার আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন। জেলের কর্মকর্তারা বিষয়টি জানার পরও আদালতের আদেশ অমান্য করে আসামিকে মুক্তি দিয়েছেন। তাই আসামির আদালতে হাজির হওয়ার সম্ভাবনা কম।