বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে মাদ্রাসাছাত্র ফাহমিদ হাসান শুভকে (১৪) শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রবিবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনায় মামলা করেন নিহতের বাবা সুলতান শেখ। বিকালে অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় ধুনট থানার ওসি সৈকত হাসান বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’
গ্রেফতারকৃত চার আসামি হলেন, ধুনট সদর ইউনিয়নের উল্লাপাড়া গ্রামের মৃত তোরাব শেখের ছেলে আবদুল মান্নান (৫০), তার স্ত্রী মদিনা খাতুন (৩৮), ছেলে মারুফ শেখ (২০) ও নিহতের নানার ভাই ফরহাদ শেখের স্ত্রী খোদেজা খাতুন (৫৫)। নিহত শুভ শেরপুর উপজেলার খন্দকারটোলা এলাকার সুলতান শেখের ছেলে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৯ জুলাই নানা ফরিদ শেখ শুভকে বাড়িতে রেখে বাজারে যান। বাড়ি ফিরে ঘরে শুভর গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। পরে লাশ উদ্ধার করে জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই অমিত বিশ্বাস বলেন, ‘দীর্ঘ ছয় মাস পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শুভর আত্মহত্যাকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় শুভর বাবা সুলতান শেখ সোমবার চার জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে আসামি আবদুল মান্নান, স্ত্রী মদিনা, ছেলে মারুফ ও প্রতিবেশী খোদেজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সন্তান না থাকায় ফরিদ শেখ নাতি শুভকে বাড়ির জায়গা লিখে দিতে চেয়েছিলেন। এতে ফরিদের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী খোদেজা, মামাতো ভাই আবদুল মান্নান, তার স্ত্রী মদিনা খাতুন ও ছেলে মারুফ শেখ ক্ষিপ্ত হন। তারা সম্পত্তির লোভে শুভকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঘরের বাঁশের বেড়ায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন। এরপর আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছেন তারা।