বগুড়ার আদমদীঘির চাঁপাপুরে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা থেকে দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ক্যাশিয়ার সুজন রহমানকে (২৭) গ্রেফতার করেছে র্যাব। র্যাব-১২ বগুড়া ও র্যাব-৪ সাভারের সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে ঢাকার ধামরাইয়ের তালতলা থেকে গ্রেফতার করেন। মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) বিকালে তাকে আদমদীঘি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে দুপুরে র্যাব-১২-এর কার্যালয়ে কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান।
গ্রেফতারকৃত সুজন রহমান কাহালু উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের এনামুল হকের ছেলে। তিনি আদমদীঘি ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার ক্যাশিয়ার ছিলেন।
র্যাব জানায়, গত ১১ জুন আদমদীঘি ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার ব্যবস্থাপক কাজী মিজানুর রহমান আদমদীঘি থানায় অভিযোগ করেন, সুজন রহমান গত ২৩ মে থেকে কর্মস্থলে আসেন না। অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। ওই দিনই মার্জিয়া বেগম নামের এক গ্রাহক তার জমাকৃত চার লাখ পাঁচ হাজার ২৩ টাকা তুলতে এসে দেখেন, অ্যাকাউন্টে আছে ৪১ হাজার ৮৬০ টাকা। সুজন ওই টাকা অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। মার্জিয়া বেগমসহ অর্ধশতাধিক গ্রাহকের এক কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান। গ্রাহকদের এসব অভিযোগ পেয়ে গত ২৯ মে আদমদীঘি থানায় সুজনসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শাখার ব্যবস্থাপক। এরপর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র্যাব। অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর সোমবার রাতে তাকে ধামরাই উপজেলার তালতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বিকালে আদমদীঘি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারের পর সুজনের দেওয়া তথ্যের বরাতে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে সুজন র্যাবকে জানান ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখাটি তার চাচা নুরুল ইসলামের নামে। চাচা আর্থিক সংকটে পড়লে দুজনে পরিকল্পনা করে গ্রাহকের টাকা নেওয়ার পর অ্যাকাউন্টে জমা দেননি। টাকাগুলো চাচা-ভাতিজা ভাগ করে নেন। পাশাপাশি গ্রাহকের একাধিকবার আঙুলের ছাপ নিয়ে অ্যাকাউন্টে থাকা অধিক টাকা তোলেন। কিছু টাকা দিয়ে রেখে দেন। এভাবে গত এক বছরে দেড় কোটি টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন তারা। ঘটনায় জড়িত সুজনের চাচা পলাতক রয়েছেন। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
আদমদীঘি ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা সূত্রে জানা যায়, আমানতের টাকা ফেরত ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে গত ২৩ জুন ওই শাখায় তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন গ্রাহকরা। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শাখার কার্যক্রম শুরু করেন।