বগুড়ার শিবগঞ্জে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই)। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাকিবুল হাসান নামের এক কলেজছাত্র। অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি পরে ঠিক করে দেবো।’
অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম খোকন চন্দ্র। তিনি শিবগঞ্জের মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত আছেন। অভিযোগকারী রাকিবুল হাসান শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের মেঘাখোর্দ্দ দক্ষিণপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে ও বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে রাকিবুল হাসান লিখেছেন, ‘আমাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় গত ২৪ জুন আদালতে একটি মামলা করি। আদালত এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে শিবগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেন। থানা থেকে মোকামতলা তদন্ত কেন্দ্রের এসআই খোকন চন্দ্রকে ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি তদন্ত শেষে গত ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দেন। সেখানে উল্লেখ করেছেন, বাদীপক্ষের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। উল্টো আসামিপক্ষের সঙ্গে বাদীর বাবার মারামারিতে শেখ সাদী নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ এই তথ্যটি সঠিক নয়; বর্তমানে শেখ সাদী সুস্থভাবে বেঁচে আছেন। এ অবস্থায় এসআই খোকন চন্দ্রের মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের কারণে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।’
রাকিবুল হাসান বলেন, ‘ওই পুলিশ কর্মকর্তা দুর্নীতিবাজ। আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ করে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
এসআই খোকন চন্দ্র বলেন, ‘প্রতিবেদনে মামলার নম্বরটা সঠিক দেওয়া আছে। কিন্তু আসামিপক্ষের শেখ সাদীর ভাই সালাউদ্দিন পটল নিহতের জায়গায় ভুলক্রমে শেখ সাদী হয়ে গেছে। পরে এটি ঠিক করে দেবো।’
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অনুসন্ধান করা হবে। সত্যতা পেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’