জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন চা-বিক্রেতা মো. হানিফ। এই জিডি তদন্ত করার কথা বলে তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন নন্দীগ্রাম থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলমগীর হোসেন। আরও ১০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এর প্রতিকার চেয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এই চা-বিক্রেতা। একইসঙ্গে অভিযোগের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, রেঞ্জের ডিআইজি ও দুদক কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন তিনি।
বুধবার (০১ জানুয়ারি) সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এ লিখিত অভিযোগ দেন নন্দীগ্রাম সদরের কচুগাড়ি এলাকার চা-বিক্রেতা মো. হানিফ। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশী মৃত অসিম উদ্দিনের ছেলে মো. টুকু, আবদুল ওয়াহেদ পুটু ও মেয়ে রিনা খাতুনের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় জিডি করি। বিবাদীরা আওয়ামী লীগপন্থি হওয়ায় এতদিন সুবিচার পাইনি। উল্টো তারা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করে আসছিলেন। এখন থানায় জিডি করেও হয়রানির শিকার হচ্ছি। ডিজি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া নন্দীগ্রাম থানার এএসআই আলমগীর হোসেন আদালতে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ঘুষ নেন। গত ২৬ নভেম্বর আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর আবারও জিডি তদন্তের কথা বলে ১০ হাজার টাকা চান। আমি চা-বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই জানালে এএসআই আলমগীর আমার বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দেবেন বলে হুমকি দিয়ে চলে যান। বিবাদীরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন সময় মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করে আসছেন। নিরুপায় হয়ে জিডি করেছিলাম। এখন উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছি। এজন্য এএসআই আলমগীরের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।’
জানতে চাইলে চা-বিক্রেতা মো. হানিফ বলেন, ‘জিডি তদন্তের কথা বলে তিন হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন এএসআই আলমগীর। এখন আরও ১০ হাজার টাকা চাচ্ছেন। আমি কই থেকে দেবো এত টাকা?।’
অভিযোগের বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার এএসআই আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি হানিফের জিডির তদন্ত করছি। তবে তার কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া কোনও ঘুষও দাবি করিনি।’
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘চা-বিক্রেতার কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এবং তদন্তে সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে বগুড়ার পুলিশ সুপার জিদান আল মুসা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি এখনও অভিযোগের কপি হাতে পাইনি। হয়তো ওই চা-বিক্রেতা আমার কার্যালয়ের কারও কাছে অভিযোগের কপি দিয়ে গেছেন। সেটি হাতে পাওয়ার পর তদন্ত করে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।’