বগুড়ার কাহালুতে পুলিশের মারপিটের শিকার হয়ে জাহিদুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তি গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কাহালু থানার এএসআই বেলাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে তাকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়। বুধবার বিকালে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আসাদুজ্জামান সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাহালু উপজেলার শেখাহার তেলিপাড়ার আহম্মেদের ছেলে জাহিদুল ইসলাম একাধিক বিয়ে করেন। কিছুদিন আগে তৃতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। এরপর ওই নারী কালাই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার পিলকুঞ্জ ঝাঁঝরপাড়া গ্রামের নাসির উদ্দিনকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে জাহিদুল তার সাবেক স্ত্রীকে ফেরত চেয়ে আসছিলেন। নাসির রাজি না হওয়ার তার সঙ্গে জাহিদুলের সম্পর্ক খারাপ হয়।
গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন দুপুরে নাসিরের বাড়িতে যান জাহিদুল। সেখানে যাওয়ার পর তিনি সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য নাসির কাহালু থানার এএসআই বেলাল হোসেনকে ডেকে বাড়িতে আনেন। এরপর জাহিদুল মারপিটের শিকার হলে তিনি বাড়িতে ফিরে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন। স্বজনরা প্রথমে তাকে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে, সাবেক মেম্বার নাসির উদ্দিনের বাড়িতে জাহিদুলকে কাহালু থানার এএসআই বেলাল হোসেন মারপিট করেছেন এবং এ কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা প্রথমে এএসআইকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজড ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে এএসআই বেলাল হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে কল দিলেও রিসিভ করেননি।
কাহালু থানার ওসি আবদুল হান্নান বলেন, ‘সাবেক মেম্বার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে জাহিদুল ইসলামের পূর্ব থেকে বিরোধ ছিল। গরু চুরির ঘটনায় জাহিদুল ওই সাবেক মেম্বারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেছেন। সর্বশেষ জাহিদুলের তৃতীয় স্ত্রীকে বিয়ে করায় তার সঙ্গে নাসিরের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। তিনি স্ত্রীকে ফেরত চেয়ে আসছিলেন। ঈদের দিন দুপুরে জাহিদুল তার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে ফিরে আনতে নাসিরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে জাহিদুল হট্টগোল করায় নাসির এএসআই বেলালকে বাড়িতে ডেকে এনেছিলেন। তবে তখন জাহিদুলকে মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। তিনি তালাক দেওয়া স্ত্রীকে ফেরত না পেয়ে মনের দুঃখে বাড়িতে এসে গ্যাস ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেন। এর সঙ্গে এএসআই বেলাল হোসেনের কোনও সম্পর্ক নেই। তবু অভিযোগ উঠায় তাকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।