রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের সিট ভাড়া কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১২টার দিকে কলেজের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আগে হোস্টেলের নির্ধারিত সিট ভাড়া ছিল ৫০০ টাকা, গত অক্টোবর মাসে এটি বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। প্রশাসন বলেছিল, পরে কমাবে। এখন কমাচ্ছে না। বাড়তি এ ভাড়া কমাতে হবে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যের কারণে হোস্টেলের বিদ্যুৎ, বিলসহ নানা খাতে টাকা বকেয়া পড়ে যায়। বর্তমান সময়ে হোস্টেল প্রশাসন পূর্বের সেই বকেয়া পরিশোধের জন্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত ভাড়া চাপিয়ে দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের উদাহরণ টেনে বলেন, ঢাকা কলেজে সর্বোচ্চ খরচ হলেও সিট ভাড়া নেওয়া হয় ৪০০ টাকা। সেখানে রাজশাহী কলেজে এমন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি চাপ। একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এমন অতিরিক্ত সিট ভাড়া অন্য আর কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আদায় করা হয় না। ভাড়া কমানোর জন্য আগামী ২২ মে পর্যন্ত প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় দিচ্ছি আমরা। এরপর কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদ আবীর বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিল বকেয়াসহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির কারণ দেখিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ গত অক্টোবর মাস থেকে সিট ভাড়া ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ করে দেয়। কর্তৃপক্ষ বলেছিল ৬০ লাখ টাকার মতো বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে। এ ছাড়া হোস্টেলে ৫ আগস্টের আগে আন্দোলন চলাকালীন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কথা ছিল এক বছরের মধ্যে হোস্টেলের ফি কমাবে। হোস্টেলে যাদের সিট বুকিং দিচ্ছে তাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে আট হাজার ৪০০ টাকা। আমরা দাবি করছি ছয় হাজার টাকা নেওয়ার। কিন্তু কলেজ প্রশাসন কোনও দাবি না মানায় আমরা সমাবেশ করছি।’
কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এ অতিরিক্ত ভাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। তাই হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীরাসহ কলেজের সব সাধারণ শিক্ষার্থী এ ভাড়া কমানোর দাবি জানাতে আজকে মানববন্ধন ও সমাবেশে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমর্থন জানিয়ে কলেজ প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। তা না হলে আন্দোলন চলবে।’
সমাবেশ চলাকালে সেখানে যান রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ইব্রাহিম আলী ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. সেরাজ উদ্দিন। শিক্ষার্থীরা তাদের কাছেও এ দাবি তুলে ধরেন।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী জানান, ‘আগামী ২২ মে হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কলেজ প্রশাসন। আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’