X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত বেদেপল্লী

নীলফামারী প্রতিনিধি
২৩ মার্চ ২০১৮, ১৭:০০আপডেট : ২৩ মার্চ ২০১৮, ১৮:০৪

বেদে পল্লীতে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল পথে পথে ঘুরে সাপ ধরা, সাপের খেলা দেখানো, সিঙ্গা লাগানো, তাবিজ-কবজ বিক্রি করে জীবনযাপন করেন বেদেরা। দিনশেষে সন্ধ্যা হলে ফেরেন ঝুপড়িতে। তারও আবার স্থায়ী নয়। জীবিকার প্রয়োজনে তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যান। এভাবেই বছরের পর বছর যাযাবর জীবনযাপন করছেন বেদেরা। নীলফামারী সদরের সুটিপাড়ার বেদেপল্লীটি একটু ভিন্ন। এখানে জ্বলছে লাইট, চলছে টেলিভিশন। সৌর বিদ্যুতের কল্যাণেই আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বেদেদের যাযাবর জীবনে।

সুটিপাড়ায় বেদেপল্লীতে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় বেদে সর্দার রবিউল ইসলামের (৪৫)। তিনি বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবনধারার পরিবর্তন হচ্ছে। বিষধর সাপের খেলা দেখিয়ে, সিঙ্গা বসিয়ে, দাঁতের পোকা বের করা, তাবিজ-কবজ বিক্রি ও জাদু দেখিয়ে সামান্য আয় রোজগার আমাদের। জীবনকে আলোকিত করতে নিজেদের অর্থায়নে সৌর প্যানেল ব্যবহার করছি আমরা।’

তিনি বলেন, আগের দিনে পাল তোলা নৌকায় এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বেদেরা চলাচল করতো। মাসের পর মাস তারা নৌকায় থাকতো। এখন আর নদীও নেই, পাল তোলা নৌকাও নেই। জীবিকার প্রয়োজনে খরা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলায় যান এবং ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে সেখানে থাকেন।

বেদে পল্লীতে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল তিনি বলেন, ‘সৌর বিদ্যুতের আলোয় এখন আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে, আমরা মোবাইল ফোনে চার্জ দেই। এছাড়া সোলার টিভি, সোলার ফ্যান ব্যবহার করে জীবনকে উপভোগ করতে পারছি।’

ওই বেদে বহরের হোসেন আলী (৪৩) ও সাজু মিয়া (৬০) বলেন, এই ডিজিটাল দেশে তারা যাযাবর জীবনযাপন থেকে রক্ষা পেয়েছে। বেদেকন্যা বৈশাখী আক্তার বলেন, ‘আমার দাদি গ্রামে গ্রামে গাওয়াল করে সিঙ্গা লাগিয়ে, দাঁতের পোকা তুলে, তাবিজ-কবজ বিক্রি করে সংসারের খরচ জোগাড় করতেন। আর আমার বাবা শাহজাহান সাপুড়ে এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাপের খেলা দেখান।’

শরিফ উদ্দিন (৮৫) নামের এক বেদে বলেন, বর্তমানে অনেক বেদে নারী-পুরুষ বিকল্প পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন দোকান করা, হাঁস-মুরগি বা কবুতর পালন, মাছ চাষ ও কাপড় সেলাইয়ের মতো গৃহস্থালি কাজ।

বেদে সর্দার রবিউল বলেন, ‘পেশাগত কারণে আমরা বছরের ছয় মাস বাইরে এবং ছয় মাস নিজ এলাকায় থাকি। তাই ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার করার সুযোগ পায় না। তবে এই প্রজন্মের বেশিরভাগই ছেলেমেয়েই লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত।’

দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘আমার চাচা শরিফ উদ্দিন বয়স্কভাতা কিংবা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নারীরা বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা, মাতৃকালীন ভাতাও পায় না। কেউ আমাদের খোঁজও রাখে না। আমরাও সব ধরনের নাগরিক সুবিধা চাই।’

 

 

/এসটি/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইন্দোনেশিয়ার রুয়াং আগ্নেয়গিরিতে আবারও অগ্ন্যুৎপাত,সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি
ইন্দোনেশিয়ার রুয়াং আগ্নেয়গিরিতে আবারও অগ্ন্যুৎপাত,সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি
ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ, ৩ জন গ্রেফতার
ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ, ৩ জন গ্রেফতার
রাজধানীতে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার ২০
রাজধানীতে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার ২০
লেভার হ্যাটট্রিকে দুইয়ে ফিরেছে বার্সা
লেভার হ্যাটট্রিকে দুইয়ে ফিরেছে বার্সা
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার