কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পুলিশের ওপরও হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। বুধবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় জেলা শহরের কলেজ মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে ও ব্যাপক লাঠিপেটা করে।
সংঘর্ষে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজার রহমানসহ ৫ পুলিশ সদস্য এবং ১৫-২০ জন ছাত্রলীগকর্মী আহত হয়েছেন। আহত ছয় জনকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রওশন কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর কলেজ মোড়ের রুপসী বাংলা হোটেলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ রাকিবুজ্জামান রাকিব গ্রুপের ছাত্রলীগকর্মী ফিরোজকে সাধারণ সম্পাদক রকিবউজ জামান রনির গ্রুপের কর্মীরা মারধর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ব্যাপক লাঠিপেটা করে। ছাত্রলীগকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজার রহমানসহ ৫-৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপরই মারমুখো হয় পুলিশ। ওসিসহ নিজ সদস্যদের আহত হওয়ার খবরে এসময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করে। তখন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পুলিশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যবসায়ীদের মারধর করে।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ রাকিবুজ্জামান রাকিব জানান, যুবলীগ আহ্বায়ক আনিছুর রহমান খন্দকার চাঁদের উস্কানিতে ছাত্রলীগের একটি অংশ আমার কর্মীর ওপর হামলা করেছে। আমরা পুলিশের কথামতো ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে তারা আবারও আমাদের ওপর হামলা করে। তারা পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
যুবলীগের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান খন্দকার চাঁদ বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি নিজেই উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। পরে পুলিশ এসে ধাওয়া করে।’ ছাত্রলীগ সভাপতির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেন জেলা যুবলীগের এ নেতা।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজীব জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হঠাৎ করে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইলে ছাত্রলীগকর্মীরা পুলিশের ওপরও হামলা করে। এতে আমাদের সদর থানার ওসিসহ ৫-৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতির অবনতি হলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান জানান, বর্তমানে পুরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।