জমে উঠেছে পঞ্চগড়ের কোরবানির হাট। শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা চলছে ভালোই। জেলার ১৩টি হাটেই প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগল উঠেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলছেন, লাভ নয়, গরু বিক্রি করে আসলই উঠছে না। করোনা পরিস্থিতি আর গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের কারণে শুরুর দিকে পশুর হাটগুলোতে তেমন ক্রেতা সমাগম না হলেও শেষ সময়ে সেই চিত্র বদলেছে। তবে পশুর হাটগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ বিভিন্ন সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তার কোনটিই মানা হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) বোদা উপজেলার নগরকুমারী হাটে ভিড়ের জন্য হাঁটাই যাচ্ছিল না। হাটের নির্ধারিত জায়গায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় সড়কের ওপর চলে এসেছে। ৪০-৬০ হাজার টাকার মধ্যে গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। আর ৬-১৫ হাজার টাকার মধ্যে ছাগল বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা সন্তুষ্ট হলেও বিক্রেতারা নাখোশ। জেলার বাইরে থেকেও হাটে গরু নিয়ে এসেছেন অনেকেই। হাটে এবার ভারতীয় গরু নেই বললেই চলে। তবে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি কাউকে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কিংবা পশুর হাটের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকেই এ বিষয়ে কোনও প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বোদা উপজেলার সাতখামার গ্রামের দাইমুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, গরুর দাম অন্যান্য বারের তুলনায় একটু কম আছে। এবার কোরবানির জন্য ৫৬ হাজার টাকা দাম দিয়ে একটি গরু কিনেছি।
বোদা পৌরসভা এলাকার মিজানুর রহমান জানান, ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দু’টি ছাগল কিনেছি। দাম কম আছে।
চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের গোমস্তাপুর এলাকার বিক্রেতা হানিফ আলী বলেন, ‘ভাই প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। এবার গরু বিক্রি করে লাভ হবে না, আসলই উঠছে না। যে গরু বিক্রি করেছি ৬৫ হাজার টাকায়। গতবছর ওইরকম গরু বিক্রি হয়েছিল ৮০ হাজার টাকায়।’
ময়দানদিঘী ইউনিয়নের বেতবাড়ী এলাকার আব্দুল খালেক বলেন, ‘এবার গরু বিক্রি করে আসলই উঠবে না। খাদ্য আর পরিচর্যার খরচই উঠছে না। গরুর দাম অনেক কম। আমাদের অনেক লস হবে। ’
জেলার কোনও পশুহাটেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। কারও মাস্ক থাকলেও তা লাগানো আছে গলায়। সামাজিক দূরত্ব মানারও কোনও সুযোগ নেই।
নগরকুমারী হাটের ইজারাদার আব্দুর রহমান বলেন, ‘আজকের (বৃহস্পতিবার) হাটই শেষ হাট। তাই ক্রেতা বিক্রেতার সংখ্যা বেশি। শেষ হাট হওয়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাকাটা চলবে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করার কথা বলা হলেও কেউই তা মানছেন না। ’
পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মজিদ জানান, কোরবানির জন্য জেলায় ৫০ হাজার পশু চাহিদা রয়েছে। সাধারণ মানুষ যেন পশুর হাট থেকে সুস্থ পশু কিনতে পারে সেজন্য আমাদের ভেটেনারি মেডিক্যাল টিম বসানো হয়েছে।
পঞ্চগড় জেলায় এবার অনলাইনে কোন পশু বিক্রি হচ্ছে না। জেলা প্রশাসন অনলাইন হাট চালুর উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।