X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এক পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যাওয়া ছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন হুইপ ইকবালুর রহিম

দিনাজপুর প্রতিনিধি
২০ আগস্ট ২০২২, ২২:০০আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ২৩:০১

এক পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যাওয়া দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ১০ বছর বয়সী সুমাইয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। ‘এক পায়ে দৈনিক ২ কিমি পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া’ শিরোনামে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রচারের পর মোবাইল ফোনে কল করে এই স্কুলছাত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি।

ইকবালুর রহিম বলেন, ‘লেখাপড়ার প্রতি কী পরিমাণ আগ্রহ থাকলে মাত্র ১০ বছর বয়সী একজন মেয়ে এক পায়ে ভর করে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে পারে, তা সুমাইয়াকে দেখে বোঝা যায়। তার কষ্টের বিষয়গুলো জানতে পেরে আমি একটি স্বয়ংক্রিয় হুইল চেয়ার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। সেটা সে নিজেই পরিচালনা করে নিয়মিত স্কুলে যাওয়া-আসা করতে পারবে। একইসঙ্গে তার পায়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো।’

তিনি বলেন, ‘আমি গত ১৩ বছর ধরে সংসদ থেকে পাওয়া ভাতার সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করি গরিব-মেধাবীদের পড়ালেখায়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন সেই অর্থে। আমরা পাঁচ ভাইবোন প্রতি বছরই পড়ালেখার জন্য ১৫০ জন শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করি। অর্থের অভাবে যাতে কোনও শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। হয়তো তাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন, যারা আগামী দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবেন।’

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের আলীপাড়ার রিকশাচালক শফিকুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া। দুই বছর বয়সে রাস্তায় পড়ে যায়। ওই দুর্ঘটনায় তার বাঁ পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। পা-টি এখন ডান পায়ের থেকে ছোট হয়ে গেছে। দাঁড়ালে ওই পা মাটিতে পড়ে না। এক পায়ে ভর করেই সুমাইয়াকে সব কাজ করতে হয়।

বর্তমানে সে উত্তর আলোকডিহি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন পিঠে ব্যাগ আর হাতে বই নিয়ে এক পায়ে ভর করে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে হাজির হয়। সুমাইয়া বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায়। বাংলা ট্রিবিউনকে এই শিক্ষার্থী বলে, ‘প্রতিদিন এক পায়ে ভর করে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু আমি পড়াশোনা করতে চাই। বড় হয়ে চিকিৎসক হবো। যেন আমার মতো কেউ চিকিৎসার অভাবে কষ্ট না পায়।’

তার বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আট বছর ধরে চিকিৎসা করাচ্ছি। কোনও ফল পাইনি। অর্থোপেডিক চিকিৎসকরা বলেছেন, তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে মেয়ের পা ভালো করতে। কিন্তু আমি তো রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। কোথায় পাবো এত টাকা? আমার মেয়ের এমন সংবাদ পেয়ে হুইপ ইকবালুর রহিম হুইল চেয়ার দিতে চেয়েছেন। চিকিৎসার সহযোগিতা করতে চেয়েছেন।’

সুমাইয়ার মা সুমি আক্তার বলেন, ‘স্বপ্ন দেখি, আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হবে।’

উত্তর আলোকডিহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামনুর রশিদ বলেন, ‘পড়ালেখায় সুমাইয়া খুবই ভালো। কোনোদিন স্কুল ফাঁকি দেয় না। কষ্ট করে স্কুলে আসে। আমরা চাই সে সুস্থ হোক। মানুষের মতো মানুষ হোক।’

/আরকে/এফআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে প্রাণ গেলো বাবার
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে প্রাণ গেলো বাবার
নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ৮
নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ৮
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!