বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যাকারী ও হুকুমদাতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন পরিবার ও স্বজনরা।
শনিবার (১০ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নিহত আবু সাইদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে গিয়ে তার কবর জিয়ারত করলে তার বাবা মকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগম ও সহপাঠীরা এ দাবি জানান।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে নিহত সাঈদের মা জানান, তার ছেলেকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত হত্যাকারী ও নির্দেশদানকারীদের গ্রেফতার না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই অভিযোগ করেন তার বাবা মকবুল হোসেন।
এ সময় ড. ইউনূস তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, এটা এক বাংলাদেশ, দুই বাংলাদেশ নয়। এটা আবু সাঈদের বাংলাদেশ। এই আবু সাঈদের বাংলাদেশে কোনও ভেদাভেদ নেই। তাই যে যেখানে আছেন আবু সাঈদের মা-বাবা, ভাই-বোনদের বা যারা যেখানে আছেন তাদের রক্ষা করুন। কোনও গোলোযোগ করতে দেবেন না।
সাঈদের সহপাঠী সাব্বির আহামেদ জানান, সাঈদ ছোটবেলা থেকে প্রতিবাদী ছিলেন। কখনও কোন অন্যায়ের সঙ্গে তাকে আপস করতে দেখিনি। লেখাপড়ায় সে ছিল অত্যন্ত মেধাবী। পরিবারের অভাব-অনটন তার লেখাপড়াকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনি করতো। ইংরেজিতে দক্ষ ছিল বলে টিউশনির টাকা দিয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়িতে সংসারের খরচ পাঠাতো।
তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে বাবনপুর গ্রাম তথা পীরগঞ্জের মানুষ একজন প্রতিবাদী সৎ ছেলেকে হারালো। আমরা তাকে গুলি করে হত্যাকারী পুলিশ সদস্য ও হুকুমদাতা পুলিশ কর্মকর্তার অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি করছি।
একই কথা বলেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। তার সহপাঠী রোকসানা আনোয়ার বলেন, আমাদের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। খুবই বেদনাদায়ক ঘটনা। সে একজন ভালো সংগঠক। সে তো কোনও অস্ত্র নিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করেনি- যার জন্য তাকে টার্গেট করে হত্যা করতে হবে। এটা আমরা বেরোবির শিক্ষার্থীরা কোনও দিনই মানবো না। এর বিচার না হলে দায়ীদের গ্রেফতার না করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় না করানো পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
আরেক সহপাঠী বন্ধু মুশতাক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন করার সময় খুব কাছে থেকে তাকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। এই হত্যার বিচার চাই।