রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের বিজয়ী চেয়ারম্যান সাবেক বিএনপি নেতা মোকাররম হোসেন সুজন শপথ গ্রহণের এক ঘণ্টা পরই অপসারিত হয়েছেন।
সোমবার সারা দেশের ৪৯৩ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অপসারণের সরকারি প্রজ্ঞাপনে গঙ্গাচড়া উপজেলার নামও রয়েছে। মোকাররম হোসেন চেয়ারম্যান হিসেবে সোমবার সকালে শপথ গ্রহণ করে উপজেলা পরিষদে পৌঁছানোর আগেই সরকারিভাবে এই ঘোষণা চলে আসে। এতে তার স্বপ্নভঙ্গ হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কনফারেন্স কক্ষে গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন মোকাররম হোসেন। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন। শপথ নিয়ে এলাকায় ফেরার আগেই দুপুর ১২টার দিকে জানতে পারেন স্থানীয় সরকার বিভাগ সারা দেশে ৪৯৩ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করেছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৯ মে তৃতীয় ধাপে গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে ৮৩৩ ভোটে পরাজিত করে জয়ী হন মোকাররম হোসেন। গত ৪ জুন গেজেট প্রকাশিত হয় এবং ৩ জুলাই শপথের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু ১৩ জুন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে শপথের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল জেলা যুগ্ম জজ আদালত-১-এ মামলা করেন পরাজিত প্রার্থী রুহুল আমিন। এতে ২৩ জুন শপথের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুল মালেক। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যান মোকাররম। ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে শপথ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরই প্রেক্ষিতে রবিবার রংপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সোমবার সকালে শপথ গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। সেই নির্দেশের আলোকে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শপথ নেওয়ার এক ঘণ্টা পর অপসারণে তার চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের স্বপ্ন ভেঙে যায়। সরকারি প্রজ্ঞাপনে সারা দেশের ৪৯৩ উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে তিনিও অপসারিত হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোকাররম হোসেন সুজন বলেন, ‘সরকার যেহেতু সব উপজেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তাই এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।’
প্রসঙ্গত, এই নির্বাচনে মোকাররম হোসেন সুজন ২৯ হাজার ৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।