জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম গতকাল মঙ্গলবার রাতে তার এক ফেসবুক পোস্টে সেনাবাহিনীর প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় নানা অভিযোগে অভিযুক্ত রামজীবন কুন্ডু নামের একজন সাব-রেজিস্ট্রারের বসে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পোস্ট দেওয়ার পর বুধবার সকালে রামজীবন কুন্ডুর কর্মস্থল রংপুরের পীরগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা জানান, তারা অভিযানে এসে রামজীবন কুন্ডুকে কর্মস্থলে পাননি। তিনি ছুটির আবেদন করলেও সেখানে তার স্বাক্ষর নেই। তার বিরুদ্ধে খাজনা খারিজ ছাড়াই দলিল সম্পাদনের অভিযোগ রয়েছে এবং যোগদানের পর মাত্র চার মাসে অফিসে দলিল নিবন্ধনের হার দ্বিগুণ হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয় রংপুরের সহকারী পরিচালক মো. সাবদারুল ইসলাম বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আমরা অভিযান চালিয়েছি। অভিযানে বেশ কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে। তার মুজিবনগর সরকারের মুক্তিযোদ্ধা সনদ, অতিরিক্ত দলিল সম্পাদন, দলিল করতে গিয়ে জনগণের হয়রানি—এসব অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে। তাকে অফিসে না পাওয়ায় চাকরিজীবনের রেকর্ড সংগ্রহ করা যায়নি। সেগুলো পেলে যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে।’
এর আগে সারজিস আলমের ফেসবুকে পোস্ট থেকে জানা গেছে, রামজীবন কুন্ডু নিজেকে আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগনি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও রংপুর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হন এবং ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি নিয়মিত আওয়ামী লীগের বড় বড় কর্মসূচিতেও অংশ নেন। সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে রংপুর ও নীলফামারী জেলায় জাল দলিল ও নিয়োগ-বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। রংপুর সদর থেকে ‘পানিশমেন্ট পোস্টিং’-এ বোদা উপজেলায় বদলি হওয়ার কিছু দিন পরেই অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে তিনি পীরগাছায় ফিরে আসেন। রামজীবন নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ঘনিষ্ঠ লোক বলেও প্রচার করতেন এবং রেঞ্জ ডিআইজি পর্যন্ত তার ‘সিগন্যাল’ অনুযায়ী কাজ করতেন বলে দাবি করতেন।