X
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২
কমেডি থেকে ভিলেন

‘চাপে’ আছেন রাশেদ মামুন অপু

ওয়ালিউল বিশ্বাস
২৯ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৪৭আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৫০

শুরুটা টিভি নাটকে আঞ্চলিক ভাষায় কমেডির খোরাক জোগালেও এখন পুরোটা বিপরীত চিত্র। ঢাকাই নির্মাতাদের কাছে এখন পছন্দের অন্যতম ভিলেন বা ভার্সেটাইল অভিনেতার নাম রাশেদ মামুন অপু।

ছোট পর্দার জনপ্রিয় এ অভিনেতা এখন আছেন নির্মাতা ও নেটিজেনদের স্পট লাইটের নিচে। তার সাম্প্রতিক কাজের দীর্ঘ তালিকা অনেক প্রশ্নের উত্তরও দিয়ে দেয়। টানা ১১টি ছবির কাজ শেষ করেছেন তিনি।

সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে সবচেয়ে আলোচিত কাজ হিসেবে প্রশংসা পাচ্ছে ওয়েব ফিল্ম ‘জানোয়ার’। আর সেখানে বেশিরভাগই কৃতিত্ব দিচ্ছেন এই অভিনেতাকে।

করোনাকালের পর শুধু চলচ্চিত্র নিয়েই সময় পার করছেন তিনি। হাতে রয়েছে আরও কয়েকটি কাজের ফর্দ। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন পায়ে বিদ্ধ হয়ে আছে তীর। শুটিং করছিলেন, ইফতেখার চৌধুরীর চলচ্চিত্র ‘মুক্তি’র।

মেকআপম্যান তীরটি পায়ে সেট করতে ব্যস্ত। বিশ্রামের ঠিক সেই সময়টাতেই কথা সেরে নিতে চাইলেন অপু।

বললেন, ‘‘আমার জায়গা থেকে আমি সবসময় শতভাগ ঢেলে দিয়েছি। কিন্তু ‘জানোয়ার’ আমাকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, তা আগে কখনও যেতে পারেনি। ছবিতে তো আমি একজন ভিলেন, কিন্তু মানুষ আমাকে এমনভাবে মূল্যায়ন করছে যে আপ্লুত হয়ে পড়ছি। তারচেয়েও বড় কথা, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আসলে আমাদের প্রশংসা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এর আগেও তো অনেক ভালো কাজ করেছি, কিন্তু দর্শকদের সংস্পর্শে এতটা আসতে পারিনি।’’

গত বছর করোনার কারণে লকডাউনে একটি পরিবারের নৃশংস চারটি হত্যা নিয়ে তৈরি হলো ‘জানোয়ার’ চলচ্চিত্র। এতে খুনি-ধর্ষক হিসেবে অভিনয় করেন অপু। ‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের ছাত্র ছিলাম। পেশাগত কারণে কিছু কেস স্টাডিও করেছিলাম। তাই এমন অপরাধীদের মনস্তত্ত্ব জানি। সেটাকেই কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছি এই চরিত্রে।’-
বললেন এই অভিনেতা।

একযুগ আগে ‘সিটিবাস’ নাটক দিয়ে দর্শকদের কাছে প্রথম পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। এটি প্রচারের পর ‘মামুর বেটা নাকি’, ‘আমি তোতা মিয়া’, ‘যবের ব্যাপার’, ‘ছোট ভাইকে পাশতেই পারছেন না’সহ বেশকিছু সংলাপ দর্শকদের মুখে মুখে ঘুরেছে অনেকদিন। রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষায় ছোট পর্দার অভিনেতা রাশেদ মামুন অপুর পরিচিতি বাড়িয়ে তোলে।

আর বড় পর্দায় নোমান রবিনের ‘কমন জেন্ডার’ ছবিটি প্রথম করেন। তবে ‘জানোয়ার’ পরিচালক রায়হান রাফির ‘দহন’ চলচ্চিত্র দিয়ে তার অভিনয়ের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন এই শিল্পী।

রাশেদ মামুন অপু প্রথম নাটক ‘সিটিবাস’ ও ‘দহন’ চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি কাকতালীয় ঘটনাও আছে। অপুর ভাষ্য, ‘‘সিটিবাস’ নাটকে আমি প্রথমে যুক্ত ছিলাম না। সেসময় মঞ্চনাটক ও কেয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতাম। নাটকটির শুটিং শুরুর সময় এর পরিচালক নোমান রবিনকে আমি অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলাম। দেখি, একটি ছেলে নোয়াখালীর ভাষায় চরিত্রটি করছে। তখন আমি নোমান রবিনকে বলি, ‘এটা রাজশাহীর ভাষায় করেন। আমাদের আঞ্চলিক কিছু শব্দ আছে, খুবই যায় এই চরিত্রটির সঙ্গে।’ পরিচালকের কথায়, আমি তখনই নোয়াখালীর জায়গায় রাজশাহীর ভাষায় সংলাপগুলো শোনাই। তিনি বিষয়টি খুবই পছন্দ করেন। আমাকে বলেন, ‘চরিত্রটি আমাকেই করতে হবে।’ কিন্তু অফিসের কাজে পরদিন ঢাকার বাইরে আমার যাওয়ার কথা। লঞ্চের টিকিট করাও শেষ। আমি বলি, ‘এবার হয়তো সম্ভব হবে না।’ কিন্তু পরিচালকের কথাতে একবেলার একটি সিন করি। ব্যস, সেটিই হিট হয়ে যায়। ঠিক ‘দহন’ ছবিতেও আমার একটি মাত্র সিন আছে। আর এটি মুক্তি পাওয়ার পরই চলচ্চিত্র পরিচালকরা যেন আমার প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন।’’

জানোয়ার, নবাব এলএল.বি, ট্রল- ওয়েব ফিল্মে তাকে দর্শকরা ইতোমধ্যে দেখেছেন। কাজ করেছেন- দামাল, গাংচিল, পরাণ, বর্ডার, মুক্তি; নামের ছবিতে। আর সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ‘কসাই’ ও ‘যাও পাখি বলো তারে’ সিনেমায়। বিচিত্র সব চরিত্রগুলো।

এরমধ্যে ‘কসাই’ ছবিতে প্রথমবারে মতো স্বনামে আসবেন তিনি। এটি পরিচালনা করছেন অনন্য মামুন।

ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুসময় পার করছেন অপু। তারপরও নাকি আছেন ‘খুব চাপে’। তার মতে, এখন তিনি নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় বাধা। আগের চরিত্র ছাপিয়ে যাওয়ার যে প্রচেষ্টা করেন তিনি, ‘জানোয়ার’ তা কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে। চাইছেন, সেটাকেও উতরে যেতে।

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
কানের মার্শে দ্যু ফিল্মে ‘বাঙালি বিলাস’
কানের মার্শে দ্যু ফিল্মে ‘বাঙালি বিলাস’
সিনেমায় বালাম ও জালালী শাফায়াত!
সিনেমায় বালাম ও জালালী শাফায়াত!
নতুন গানে টিনা রাসেলের ব্যাকুলতা
নতুন গানে টিনা রাসেলের ব্যাকুলতা
ট্রেলারে ‘গুলমোহর’ যেমন
ট্রেলারে ‘গুলমোহর’ যেমন
কান ক্ল্যাসিকসে চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়
কান ক্ল্যাসিকসে চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়