X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ থেকে সিনেমাটাকে মিস করবো: আরিয়ান

মাহমুদ মানজুর
১২ আগস্ট ২০২১, ১৮:২৩আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২১, ১৩:৩১

সিনেমা মুক্তির দিন-ক্ষণ চূড়ান্ত। বাজছে প্রচারণার ঢাক। তার ওপর এতে অভিনয় করেছেন সময়ের একঝাঁক তারকা—শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, ইয়াশ রোহান, ফারিণ, অর্ষা, তাসনুভা তিশা, খায়রুল বাশার, জোনায়েদ বোগদাদী প্রমুখ। ছোট পর্দার বড় নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের প্রথম ‍সিনেমা বলে কথা! তবু এই নির্মাতা বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বিষণ্ন কণ্ঠে বললেন, ‘আজ থেকে সিনেমাটাকে খুব মিস করবো’! তবে কি মহামারির কারণে ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ছবিটির মুক্তি স্থগিত, নাকি অন্য কোনও দুর্ঘটনা! এসব বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউন-এর সঙ্গে এই নির্মাতার আলাপ হলো দিলখোলা—

বাংলা ট্রিবিউন: ভূমিকা না টেনে শুরুতেই জানতে চাই, সিনেমাটাকে মিস করবেন—এই কথার অর্থ কী?

মিজানুর রহমান আরিয়ান: এটা আমার প্রথম ছবি। ব্রেইন চাইল্ড। সেটি তৈরি করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষের সহযোগিতা নিয়েছি। কাগজে-কলমে টানা ১৩ মাস এই ছবিটি নির্মাণের জন্য কাজ করেছি। মাঝে অনেকগুলো অন্য কাজও করেছি, কিন্তু প্রতিদিনই কিছু না কিছু ভেবেছি বা করেছি এই ছবিটির জন্য। যেটা আজকের (১২ আগস্ট) পর থেকে আর করবো না। সেজন্যই মিস করবো সিনেমাটাকে।

বাংলা ট্রিবিউন: সেই তো একই প্রশ্ন দাঁড়ালো। কেন মিস করবেন? ছবিটি থেকে কি আপনি নিজের নামটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন! নাকি শেষ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: তেমন কিছু নয়। আজই (১২ আগস্ট) ছবিটির সব কাজ শেষ করে চূড়ান্ত মাস্টার জমা দিচ্ছি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চরকির কাছে। এর পরের কাজটি মূলত প্রযোজনা-পরিবেশনা সংশ্লিষ্টদের। নির্মাতা হিসেবে আমার কাজটি আজই শেষ হলো। ফলে সিনেমাটি নিয়ে প্রতিনিয়ত ভাবনার সুযোগটুকু আর থাকছে না। যে ভাবনাটা একজন নির্মাতার জন্য আসলে অনেক আনন্দের, সেটা এখন বুঝতে পারছি।   

ছবির চার নায়কের সঙ্গে আরিয়ান বাংলা ট্রিবিউন: এর আগে আকাশছুঁই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন টিভি ফিকশন তৈরি করে। এটা আপনার প্রথম ছবি। তার আগে বলুন, এটাকে সিনেমা বলবেন তো! যেহেতু ওয়েবের জন্য নির্মিত।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: অবশ্যই এটা সিনেমা। এই গল্পটা আরও বহু আগে থেকে ভাবা ছিলো। আমার লক্ষ্যই ছিল সিনেমা তৈরি করা। এবং শুরুটা এই গল্প দিয়ে হবে, সেটাও ফিক্স করা ছিল।

বাংলা ট্রিবিউন: এবং সেটা নিশ্চয়ই ওয়েবের জন্য ফিক্স করা ছিল না!

মিজানুর রহমান আরিয়ান: একদম তাই। আমার সিনেমার শুরুটা যে ওয়েবের মাধ্যমে হবে সেটা ফিক্স করা ছিল না। চরকি এগিয়ে এলো এবং মহামারি। সবমিলিয়ে ওটিটির জন্যই বানালাম।

বাংলা ট্রিবিউন: কিন্তু ওয়েবে না দিয়ে অপেক্ষা তো করা যেতো। যেহেতু গল্পটি অনেক দিন ধরেই আগলে রেখেছেন। অন্য গল্প দিয়েও ওয়েবের জন্য বানাতে পারতেন।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: প্রথমত সিনেমা তো সিনেমাই। সেটা যে মাধ্যমেই প্রচার হোক। আলটিমেট সব ছবিই তো সব মাধ্যমে থাকবে। আগে আর পরে। বিষয়টি হচ্ছে গল্প ও নির্মাণ। আমি এটাকে আমার প্রথম ছবি হিসেবেই ট্রিট করেছি।   

বাংলা ট্রিবিউন: কিন্তু এটাও তো সত্যি, যেকোনও নির্মাতা বা শিল্পীর স্বপ্নই থাকে প্রেক্ষাগৃহে রাজকীয় অভিষেক!

মিজানুর রহমান আরিয়ান: আমার পরিকল্পনাও তা-ই ছিল। কিন্তু মহামারি ও রনি ভাই (প্রযোজক রেদওয়ান রনি) আমাকে এদিকে টেনে এনেছেন। আমি রনি ভাইকে অন্য অনেক গল্প শুনিয়েছি। সব শুনে উনি বললেন, এটাই বানাও আরিয়ান।

কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনের পথে বাংলা ট্রিবিউন: ছবিটি কি সিনেমা হলে মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে? পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: আমি তো সেই স্বপ্নটাও দেখি। 

বাংলা ট্রিবিউন: এবার সিনেমার প্রেক্ষাপটটি জানতে চাই। অনেক তরুণ তারকার মিলন ঘটেছে এতে। মাল্টি কাস্ট। যেমনটা এখন আর সিনেমায় দেখা যায় না।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: দেখা যায় না বলেই দেখানোর চেষ্টা করেছি। এখানে বন্ধুত্বের মোমেন্ট আছে। পরিবার ও ভালোবাসার গল্প আছে। নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যাওয়ার গল্প আছে। তিনটি গান আছে। অ্যাডভেঞ্চার আছে। আমি সব সময় জনপ্রিয় ঘরানার কাজ করে থাকি। মানে নিজেকে জাহির করার চেয়ে দর্শকদের কথা বেশি ভাবি। এখানেও তা-ই রয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: ছবির বেশিরভাগ কাজ তো হয়েছে সেন্টমার্টিনে।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: মূলত এটা ঢাকা থেকে একদল বন্ধুর কক্সবাজার হয়ে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের গল্প। এই পুরো জার্নিটাতে অনেক ঘটনা ঘটে। সেই সূত্রে ছবিজুড়ে একটা বিউটিফুল বাংলাদেশ দেখানোর চেষ্টাও করেছি। মোট ৫১টি জোনে কাজটি করেছি আমরা। শিল্পী ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রচুর সাপোর্ট পেয়েছি। অনেক দুর্গম এলাকায় কাজ করতে হয়েছে। মাঝ সমুদ্রে শুট করতে গিয়ে বেশ ক’বার ভয়াবহ বিপদে পড়েছি। আমরা প্রতিটি মানুষ এই ছবিটি নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করেছি। এটাই বড় প্রশান্তি।     

বাংলা ট্রিবিউন: এরমধ্যে নাটকের শুটিং করতে গিয়ে আপনিসহ ইউনিটের অনেকেই করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এই ছবিটি করতে গিয়ে এমন কিছু?

মিজানুর রহমান আরিয়ান: এটা বিস্ময়কর বিষয়, গত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মিলিয়ে টানা ১৭ দিন আমরা শুট করেছি। ইউনিট ছিল ৬০ জনের। এরমধ্যে একজনও আমরা করোনা পজিটিভ হইনি। কারও মধ্যে করোনার সিম্পটমও দেখা যায়নি। কারণও আছে, যা করেছি শতভাগ সচেতন হয়ে করেছি। 

বাংলা ট্রিবিউন: ১৯ আগস্ট ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। পরের ছবির জন্য কি সুস্থ পৃথিবীর অপেক্ষায় থাকবেন? কারণ, প্রেক্ষাগৃহের প্রতি তো একটা দুর্বলতা থাকেই।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: তা আছে। কিন্তু আমি বসে থাকতে রাজি নই। এরমধ্যে দ্বিতীয় ছবির চিত্রনাট্য চূড়ান্ত করছি। এটাও ওটিটি’র জন্য। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রেক্ষাগৃহের সিনেমার প্রস্তুতি নেবো।    

ছবির মূল পাত্র-পাত্রী বাংলা ট্রিবিউন: তবে তো সিনেমার রেসে পুরোদমে ঢুকে পড়লেন। আপনাকে অভিনন্দন। নিশ্চয়ই নাটক শিল্পকে বাই বাই জানালেন! যেমনটা হয়েছে অন্য অনেক নির্মাতার ক্ষেত্রেও।

মিজানুর রহমান আরিয়ান: আমি এই মহামারির মধ্যে গত দুই ঈদেও নাটক নির্মাণ করেছি। এর মাঝেই সিনেমার কাজটি সম্পন্ন করেছি। আমি নির্মাতা হিসেবে অলওয়েজ সৎ থাকার চেষ্টা করেছি। নাটক আর সিনেমা, দুটোই আমার কাছে সমান আদরের বিষয়। নাটককে আমি কখনোই ছাড়বো না। যত হিট সিনেমার ডিরেক্টরই হই না কেন, ক্যারিয়ারের শেষ দিন পর্যন্ত আমি নাটক বানাতে চাই। কারণ, ছোট পর্দা আমাকে বড় বানিয়েছে। তাই বড় পর্দায় নিয়মিত হলেও ছোট পর্দায় আমার কাজ দেখা যাবে। 

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
গার্মেন্টসকর্মীদের জীবনের গল্প ‘ঈদের ছুটি’!
গার্মেন্টসকর্মীদের জীবনের গল্প ‘ঈদের ছুটি’!
গানের নাম ‘টাকা দ্য পা পা পা’! (ভিডিও)
গানের নাম ‘টাকা দ্য পা পা পা’! (ভিডিও)
গানচিত্র নির্মাণে সিনেমার প্রযোজক!
গানচিত্র নির্মাণে সিনেমার প্রযোজক!
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না