ঈদ মানেই স্মরণীয় দিন। তবে ক্ষণটি বিশেষ হয়ে থাকে কোনও না কোনও স্মৃতিতে। মনে দাগ কেটে যাওয়া সেই গল্প শুনতে বিশেষ এ আয়োজন। স্মৃতির আস্তিন খুলে সে কথা জানিয়েছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ-
আমরা তখন সিকিমে শুটিং করছিলাম। ভারতের এ রাজ্যটির রাজধানী গ্যাংটকে কাজ চলছিল। সিনেমাটি ছিল
‘প্রেম করেছি বেশ করেছি’। পরিচালক বাদল খন্দকার ও নায়িকা ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। গ্যাংটকে একটা সমস্যা ছিল, সেখানে বাঙালি খাবার সেরকম পাওয়া যেত না। আমরা একটি মাংসের দোকান থেকে নিয়মিতই মাংস নিতাম। শুটিং ইউনিটের লোকেরা সেটা রান্না করতো। এভাবেই সেই দোকানির সঙ্গে আমাদের ভালো সখ্য হয়ে যায়।
ঈদের আগের সন্ধ্যায় ইফতারের সময় সেই দোকানির সঙ্গে কথা হয়। তিনি যখন শুনলেন, ঈদের দিন আমরা গ্যাংটকেই থাকবো, রেস্ট নেবো, কাজ করবো না; তখন তিনি বললেন, ‘অসুবিধা না হলে তোমরা আমার বাসায় দাওয়াত কবুল করো। আমার মেহমান হও।’
পরদিন সকালে দেখি তিনি আমাদের হোটেলে এসে ডাকাডাকি করছেন। জিজ্ঞেস করলেন, আমরা নামাজ পড়েছি কিনা! এরপর তার সঙ্গেই ঈদের জামাতে অংশ নিলাম।
এরপর তিনি আমাদের তার বাসায় নিয়ে গেলেন। সেকি বিশাল আয়োজন। পায়েস খাওয়ার পর দেখলাম প্রচুর বিরিয়ানি। আবার আমাদের জন্য দুম্বা জবাই দিয়েছেন। পুরো দুম্বাটি তিনি রান্না করে আনলেন আমাদের খাওয়ানোর জন্য।
আমরা সত্যিই তার আতিথেয়তায় মুগ্ধ হলাম। এখানেই শেষ নয়। তিনি আমাদের প্রত্যেকের পকেটে ২০০০ রুপি গুঁজে দিলেন ঈদি হিসেবে!
পরে আমরা জানতে পারলাম, আত্মীয়-স্বজন ছাড়া আমরা প্রবাসে ঈদ পার করছি, বিষয়টি তার মনে দাগ কেটে গেছে। একজন মুসলিম হয়ে আরেকজনের সঙ্গে তিনি ঈদ করতে চেয়েছেন। আর সেই ঘটনাটাও আমার মনে দাগ কেটে যায়।