‘মিয়া ভাই’ নামে একটি ছবি করেছিলেন ১৯৮৭ সালে। চাষী নজরুল ইসলাম নির্মিত সেই ছবিটি এতই দর্শকপ্রিয়তা পায় যে সেই থেকে ঢাকাই সিনেমার ‘মিয়া ভাই’ বনে গেলেন তিনি। যার পুরো নাম আকবর হোসেন পাঠান। দেশজুড়ে পরিচিত নায়ক ফারুক নামে।
কালজয়ী এই নায়ক গ্রাম-বাংলার পটভূমিতে নির্মিত সিনেমায় অনন্য সাফল্য পেয়েছিলেন। গ্রামীণ প্রেমিকের ভূমিকায় যেমন মুগ্ধ করেছিলেন দর্শককে, তেমনি প্রতিবাদী যুবকের চরিত্রেও তার সাফল্য উল্লেখযোগ্য।
দীর্ঘ পাঁচ দশকের চলচ্চিত্র জীবন রেখে নায়ক ফারুক চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সোমবার (১৫ মে) সকালে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) দিনভর রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
এদিন সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় ফারুকের মরদেহ। এরপর তা নেওয়া হয় অভিনেতার উত্তরার বাড়িতে। সেখান থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ নেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, রাজনৈতিক দল, নাট্যদলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অতঃপর নায়ক ফারুকের নিথর দেহ নেওয়া হয় এফডিসিতে। সেখানে তাকে সিনেমার মানুষেরা শেষবারের মতো দেখে নেন। আর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এখানেও একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর ফারুককে নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানেও বিভিন্ন তারকা হাজির হয়ে নন্দিত এই নায়ককে ভালোবাসা জানান এবং জানাজায় অংশ নেন। তারপর ফারুকের নির্বাচনী এলাকা গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় আরেকটি জানাজা।
নায়ক ফারুকের জন্ম মানিকগঞ্জে। বেড়ে উঠেছেন পুরান ঢাকায়। তবে বাড়ি করেছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জে। ফলে সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে মঙ্গলবার (১৬ মে) রাতে তাকে সমাহিত করা হবে বলে জানা গেছে।
ফারুক অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘জলছবি’ মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। এরপর তাকে দেখা গেছে ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘নয়নমণি’, ‘আলোর মিছিল’, ‘লাঠিয়াল’, ‘মিয়া ভাই’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘সারেং বৌ’, ‘সুজন সখী’র মতো কালজয়ী ছবিতে।