অবশেষে আসছে সেই কাঙ্ক্ষিত ‘অন্যদিন…’। এবার বাংলাদেশের দর্শক প্রেক্ষাগৃহে দেখতে পারবেন কামার আহমাদ সাইমন পরিচালিত এবং সারা আফরীন প্রযোজিত ভেসে বেড়ানো একটা দেশের গল্প।
‘অন্যদিন…’ ছিলো ২০১৭ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশন সিনফন্দেশিওনের ছবি। এই ছবির জন্যই ২০১৬ সালে লোকার্নোর পিয়াতজা গ্রান্দায় বাংলাদেশের প্রথম কোন নির্মাতা হিসাবে ‘ফিচারড ডিরেক্টর’-এর সম্মাননা পেয়েছিলেন কামার আহমাদ সাইমন, সেইসাথে ফ্রান্স থেকে আর্তে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ। এছাড়াও ২০১৪ সালে সানড্যান্স থেকে গ্রান্ট অ্যাওয়ার্ড জয় করে ‘অন্যদিন...’।
২০২১ সালে বিশ্বের প্রথম সারির উৎসবগুলার অন্যতম প্রধান ইডফা'র মূল প্রতিযোগিতায় পৃথিবীর সুন্দরতম আমস্টারডামের তুসান্সকি থিয়েটারে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছিল ‘অন্যদিন…’-এর। ইডফা'র ওয়েবসাইটে ‘অন্যদিন...’কে লেখা হয়েছিলো ‘ক্যালাইডোস্কোপিক ও ফিলসফিক্যাল’।
এরপর ২০২২ সালে উত্তর আমেরিকার অন্যতম উৎসব ক্যামডেন থেকে শ্রেষ্ঠ ফিচার ছবির জন্য ‘হ্যারেল অ্যাওয়ার্ড’, নিউ-ইয়র্কের মমি’তে সে বছরের মাত্র ১৮টা নির্বাচিত মাস্টারপিসে সিলেকশন, জুরিখে ‘গোল্ডেন আই’ নমিনেশন, নন্তের ফেস্টিভ্যাল অব থ্রি কন্টিনেন্টসের প্রতিযোগিতায়, সিডনিতে অফিশিয়াল সিলেকশন। এছাড়াও ২০২১ সালের জুনে ‘অন্যদিন...’ ছিলো সিডনি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ান সেগমেন্টে জুরির দায়িত্বেও ছিলেন কামার।
এভাবে দুনিয়ার নানান দেশের মর্যাদাপূর্ণ বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হলেও— নিজ দেশেই এখনও দেখানো যায়নি ‘অন্যদিন…’। কারণ, ছবিটার রাজনৈতিক কমেন্টারি বা বক্তব্য বিগত সরকারের আমলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনী পরিবেশ, রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় পছন্দ হয়নি সেন্সর বোর্ডের। তাই, এতদিন আঁটকে ছিল ‘অন্যদিন…’। জানালেন নির্মাতা কামার।
‘অন্যদিন…’ কামার আহমাদ সাইমন নির্মিতব্য জলত্রয়ীর দ্বিতীয় সিনেমা। প্রথম সিনেমা ‘শুনতে কি পাও!’ দিয়ে আলোচনায় আসেন কামার। ছবিটির জন্য প্যারিসের জর্জ পম্পিদ্যু সেন্টারে সিনেমা দ্যু রিলে শ্রেষ্ঠ ছবির জন্য গ্রাপ্রি এবং মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণশঙ্খ-সহ জয় করেন আরও অনেক আন্তর্জাতিক সম্মাননা। এছাড়াও ছবিটি পেয়েছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। আশার কথা, ইতিপূর্বে ‘অন্যদিন…’-এর সার্টিফিকেশন প্রাপ্তিতে আটকে থাকা ছবিগুলা মুক্তির আশাবাদ জানিয়ে কামার বলেছিলেন, ‘২০২৪–এর পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হবে, তার চর্চা আজকেই শুরু করতে হবে। সামনের লড়াইটা কালচারাল ন্যারেটিভের, এই লড়াইয়ে সিনেমা হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।’