মানুষ ভুল থেকে শুদ্ধতার পথে হাঁটে। অতীতকে মনে রেখে আগামীর সূচি সাজায়। এটাই আসলে জীবনচক্র। বছরের শেষ সন্ধ্যায় দাঁড়িয়ে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মানুষই জীবনের সালতামামি সাজিয়েছেন অল্প-বিস্তর। সেই আলোকে চোখ মেলেছেন নতুন বছরের অনাগত দিনগুলোর দিকেও। নতুন বছরে নিজেকে কেমন করে সাজাতে চান, কিংবা সদ্য গত বছর থেকে শিক্ষা নিয়ে কোন ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে চান না; সেটি জানার আগ্রহে সাড়া দিলেন এই সময়ের আলোচিত তরুণ অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। বছরের শেষ সন্ধ্যায় ব্যাংককের সমুদ্র সৈকত থেকে খুলে দিলেন কথার কপাট-
খুব সহজে মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলা, কাছে টেনে নেওয়া, সেনসিটিভ কথাগুলো শেয়ার করে ফেলা। এই কাজগুলো নতুন বছরে আর করতে চাই না। হু নোজ কে কখন কার বন্ধু হবে, কে কখন শত্রু হবে। ফলে ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিজের মধ্যেই রাখার প্রতিজ্ঞা করছি নতুন বছরে।
আর ২০২৩-এর শেষ দিনে দাঁড়িয়ে নিজের করা ভুলগুলোর জন্য নিজেকে ক্ষমা করে দিলাম। কারণ এই ভুলগুলো আমার খুব আপন। ভুলগুলোই আমাকে এই আমি বানিয়েছে। তাই ভুলগুলোকে আপন করে নিয়ে নতুন কিছু শিখবো নতুন বছরে। ২০২৩-এর যত শিক্ষা তার সবটুকু নিয়ে ২০২৪ শুরু করছি। গত বছর (২০২৩) নিজেকে বা পরিবারকে সে অর্থে সময় দেওয়া হয়নি। এবার সেটা দিতে চাই। নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখবো আরেকটু বেশি।
অনেক নয়, খুব লিমিটেড কিছু বন্ধু বান্ধব রাখতে চাই জীবনে। সেটাও নতুন বছর (২০২৪) থেকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। অনেক বেশি বন্ধু-বান্ধব আসলেই জীবনের জন্য দরকারি কিছু না। কারণ সবাই আপন হয় না। বরং জটিলতা বাড়ে জীবনে।
২০২৩-এ আমি নিজেকে নিয়ে অনেক প্ল্যান করেছি। এটা করবো, ওটা হবো, এটা করতে হবে। এই প্রেশারটা আর নিজেকে দিতে চাই না। বছর শেষে আমার মনে হলো- এগুলোর আসলে কোনও ভ্যালুই নাই। মনে হলো, সৃষ্টি কর্তারও একটা প্ল্যান আছে আমাকে নিয়ে। তাই নিজেকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনার মানে নেই।
আমি জানি না, ক্যারিয়ার নিয়ে কতটুকু ভাবা উচিত। এটুকু বুঝি এখন, ক্যারিয়ারটা বুঝতে বা ইন্ডাস্ট্রিটা জানার জন্য ২৩ সাল পর্যন্ত যথেষ্ট ছিলো। ২৪-এ আমি আরও বুঝে গুছিয়ে কাজ করবো। অলরেডি আমি একটু আভাস পাচ্ছি ২৪টা মনেহয় ভালোই যাবে। ২৩টা যে খারাপ গেছে তাও নয়। বরং ২৩ আমাকে অনেক স্ট্রং বানিয়েছে। যেটা ২৪ সামাল দিতে হেল্প করবে।
প্রতি সপ্তাহে একদিন হলেও গাছতলায় গিয়ে বই পড়তে চাই। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে পড়াশুনার অভ্যেসটা আমার ভালোই আছে। যদিও ইন্টার্ন করিনি এখনও। তবে পড়ার অভ্যাসটা ছাড়িনি। যেমন ব্যাংকক-এর একটি সমুদ্র সৈকতে ২৩ সালের সকল গ্লানি ভাসিয়ে দিতে এসেছি। ঢাকায় ফিরছি ৩ জানুয়ারি। এবং এখানেও আমি বই নিয়ে এসেছি। বিচে শুয়ে আমি বছরের শেষ দিনে পড়েছি হুমায়ূন আহমেদের ‘দ্বৈরথ’। এভাবে আমি সপ্তাহে একটা করে বই আরাম করে গাছতলায় শুয়ে-বসে পড়তে চাই।
তবে এবারও (২০২৪) রাত জাগবো প্রচুর। বিয়ে করার প্ল্যান নাই এ বছরও। মানুষের মাঝে হ্যাপিনেস ছড়িয়ে দিতে চাই। সবাইকে হ্যাপি নিউ ইয়ার।