প্রযোজক হিসেবে অভিনেত্রী জয়া আহসানের পথচলা খুব বেশি দিনের নয়। তবে অভিনয়ের মতো প্রযোজক হিসেবেও তিনি দারুণ সফল। যার অন্যতম প্রমাণ ‘দেবী’। সেই ধারাবাহিকতায় এবার মুক্তি পেয়েছে ‘জয়া আর শারমিন’।
দুটো ছবিতেই প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান।
শুক্রবার (১৬ মে) জয়ার শেষ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে ঢাকার চারটি প্রেক্ষাগৃহে। হল সংখ্যা কম হলেও, প্রথম দিনের প্রথম শো দেখে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রযোজক জয়। এদিন তিনি বেলা ১১টায় বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবিটি উপভোগ করেছেন সাধারণ দর্শকদের সঙ্গে। এসময় তার পাশে ছিলেন সিনেমার অন্যতম সহশিল্পী মহসিনা আক্তার। সিনেমা দেখার পর জয়া আনন্দ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ‘জয়া আর শারমিন’কে দর্শকরা যে এত মিষ্টি করে গ্রহণ করছেন আজ সকাল থেকে, এই ব্যাপারটা শিল্পী হিসাবে এবং একজন প্রযোজক হিসাবে আমার জন্য খুব খুব খুব আনন্দের। এমন ছোট ছোট গল্পগুলোই যে সবাইকে টানছে, সবাই যে আমরা যা বলতে চেয়েছি
তা শুনতে চাচ্ছে, সেটাই বড় প্রাপ্তি।’
জয়ার সিনেমা মানেই তো সবার বাড়তি আগ্রহ, তাহলে এত কম সংখ্যক হলে মুক্তি পাওয়ার কারণ কী? তবে কি হল রাজনীতিতে পড়েছে ছবিটি! নাকি ঈদের ছবিগুলোর রাজত্ব চলছে এখনও! এমন প্রশ্নে সিনেমাটির নির্মাতা পিপলু আর খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি তো আসলে ইনডিপেন্ডেন্ট ছবি। তাই এ ধরনের ছবির প্রচারের ক্ষেত্রে একটা লিমিটেশন থাকে। এখানে দুটি মাত্র চরিত্র, নারী প্রধান। সব কিছু মিলিয়েই সিনেমা হলের যে ডিস্ট্রিবিউশন চেইন, সেটার অংশ হতে পারছি না আমরা। একটা বড় অনুভূতির ছোট গল্প এটি। আমরা আসলে ওভাবে বড় পরিসরে ডিস্ট্রিবিউশন করতে পারিনি।’ ‘আর এ ধরনের সিনেমার ক্ষেত্রে তো আগে থেকেই একটা মতামত থাকে যে ওহ আচ্ছা, এটা তো বিশেষ শ্রেণির দর্শকের জন্য। আমজনতা এই সিনেমা কি এসে দেখবে! এ রকম আশঙ্কা থেকেই হয়তো কম প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যে চেষ্টা করেছি। সিনেপ্লেক্সে মুক্তি দিচ্ছি আমরা। তাছাড়া ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটা সিনেমা হলের মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে তারা আগে দেখতে চাইছে, সিনেমাটির ফিডব্যাক কেমন আসে প্রথম সপ্তাহে। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আসলে এ ধরনের গল্পের সিনেমাগুলোর ক্ষেত্রে এমনই হয়।’ খানিক হতাশা ও বাস্তবতার মিশেলে কথাগুলো বললেন নির্মাতা পিপলু।
বলা ভালো, দুই নারী, অভিনেত্রী জয়া এবং তার সহকারী শারমিনের সম্পর্কের উত্থান-পতনের গল্প এটি। কোভিডের সময়, এক বাড়িতে আটকে পড়া এই দুই নারী নিজেদের জন্য তৈরি করে নেয় একটি ছোট্ট জগত, যা কিনা বাইরের ভীতিকর বাস্তবতায় ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে, ফাটল ধরাতে শুরু করে তাদের ভেতরকার সম্পর্কেও। এমনই এক গল্পের সিনেমা ‘জয়া আর শারমিন’। একদিকে করোনাকালীন এক ভয়ংকর দুঃসময়ের গল্প এটি, যা অনেককেই আকৃষ্ট করবে, অন্যদিকে এখানে আছেন জয়া আহসান। সব মিলিয়ে ১৬ মে মুক্তি আলোয় পাখা মেলা এই সিনেমা নিয়ে কতটুকু আশাবাদী নির্মাতা পিপলু খান?
জবাবে বলেন, ‘অবশ্যই করোনাকালীন বিষয়টি অনেকের কাছে গুরুত্ব পাবে, সেইসাথে এই সিনেমায় যে দুই অভিনেতা পারফর্ম করেছেন, তারা নিঃসন্দেহে অনবদ্য। জয়ার কাজ সবাই দেখেছেন, অন্যদিকে শারমিন চরিত্রে মহসিনাও দুর্দান্ত। তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখার জন্যই আসলে হলে যাওয়া উচিত দর্শকদের। আমাদের যারা মধ্যবিত্ত দর্শক আছেন, তারা পরিবার নিয়ে এই সিনেমাটি দেখতে পারেন। আমার মনে হয় তারা বেশ উপভোগ করবেন। হলে বসিয়ে রাখার জন্য সব উপাদানই আছে এতে। দুই নারী অভিনেত্রী এখানে আছেন বলে হয়তো মনে হতে পারে এটি একটি বিশেষ ছবি, আসলে তা নয়। এটি সবার ছবি।’
করোনা মহামারির সময়ে শুরু হয়েছিল এই সিনেমার শুটিং। মাত্র ১৫ দিনে, মহামারির কঠিন সময়ে সীমিত একটি টিমের সহযোগিতায় সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে।
বলা প্রয়োজন, সিনেমাটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন যৌথভাবে পিপলু আর খান এবং নুসরাত ইসলাম মাটি।জয়া আর মহসিনাউল্লেখ্য, জয়া আহসান এবং মহসিনা আক্তার ছাড়াও এখানে আরও অভিনয় করেছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এটি প্রযোজনা করেছে পিপলু আর খান ও জয়া আহসান।
ছবিটি আজ (১৬ মে) থেকে দেখা যাচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শপিং মল (পান্থপথ), এসকেএস টাওয়ার (মহাখালী) এবং সীমান্ত সম্ভার (ঝিগাতলা)-এ। প্রতিদিন ৮টি করে প্রদর্শনী থাকছে সিনেমাটির। সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানান, দর্শক ফিডব্যাকের ওপর শোয়ের সংখ্যা বাড়তে-কমতে পারে। এদিকে কেরানীগঞ্জের লায়নে ছবিটি চলবে প্রতিদিন তিনটি করে শো।