X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মৃণাল সেন: প্রস্থানের এক বছর

বিনোদন রিপোর্ট
৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০৬আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:১৩

মৃণাল সেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন। গত বছরের (২০১৮) এই দিনে (৩০ ডিসেম্বর) ৯৫ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন।
১৯২৩ সালের ১৪ মে তৎকালীন পূর্ব বাংলা তথা আজকের বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পূর্ব বাংলার ফরিদপুরে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ালেখা সম্পন্ন করে দেশভাগের পর পশ্চিম বাংলার কলকাতায় স্থায়ী হন। পরবর্তীকালে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের যুগ পরিবর্তনের অন্যতম কাণ্ডারি হয়ে ওঠেন।
তার প্রয়াণের মধ্য দিয়ে উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের তিন দিকপাল চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক কুমার ঘটক ও মৃণাল সেন ইতিহাসের অবসান হয়। কিন্তু তাদের চলচ্চিত্রিক কীর্তি বিশ্বব্যাপী তাদেরকে যে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে তা চিরকালীন এবং অক্ষয় বলেই মনে করেন চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র অনুরাগীদের মতো বাংলাদেশেও মৃণাল সেনের প্রথম প্রয়াণ দিবসে (৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯) তাকে বিশেষভাবে স্মরণ করার আয়োজন করেছে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি। মৃণাল সেন স্মরণে তার চলচ্চিত্রময় জীবন ও কীর্তি বিষয়ে একটি স্মরণ আলোচনার আয়োজন করেছে তারা।
স্মরণ আলোচনাটি সোমবার, বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার ৭০১ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
স্মরণ আলোচনায় মৃণাল সেনের জীবন ও তার নির্মিত চলচ্চিত্র নিয়ে বিশ্লেষণপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্র শিক্ষক হায়দার রিজভী, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী হাশেম সূফী এবং ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়াত হোসেন মামুন।
স্মরণ ও আলোচনার এই আয়োজনটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত ছবি ‘রাত-ভোর’ মুক্তি পায়। এই ছবিটি বেশি সাফল্য পায়নি। তার দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’ তাকে স্থানীয় পরিচিতি এনে দেয়। তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’ থেকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। ১৯৬৯ সালে তার পরিচালিত ছবি ‘ভুবন সোম’ মুক্তি পায়। এই ছবিতে বিখ্যাত অভিনেতা উৎপল দত্ত অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটি অনেকের মতে মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ ছবি।
তার কলকাতা ট্রিলজি অর্থাৎ ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘কলকাতা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩) ছবি তিনটির মাধ্যমে তিনি তৎকালীন কলকাতার অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরেছিলেন। মধ্যবিত্ত সমাজের নীতিবোধকে মৃণাল সেন তুলে ধরেন তার খুবই প্রশংসিত দুটি ছবি ‘এক দিন প্রতিদিন’ (১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২) এর মাধ্যমে।
‘খারিজ’ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল। ১৯৮০ সালের চলচ্চিত্র ‘আকালের সন্ধানে’। এই ছবিতে দেখানো হয়েছিল একটি চলচ্চিত্র কলাকুশলীদলের একটি গ্রামে গিয়ে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের ওপর একটি চলচ্চিত্র তৈরির কাহিনি। কীভাবে ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষের কাল্পনিক কাহিনি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সেই গ্রামের সাধারণ মানুষদের সাথে সেটাই ছিল এই চলচ্চিত্রের সারমর্ম। ‘আকালের সন্ধানে’ ১৯৮১ সালের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার হিসাবে রুপোর ভালুক জয় করে।
মৃণাল সেনের পরবর্তীকালের ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মহাপৃথিবী’ (১৯৯২) এবং ‘অন্তরীন’ (১৯৯৪)। তার শেষ ছবি ‘আমার ভুবন’ মুক্তি পায় ২০০২ সালে।
মৃণাল সেন বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িশা ও তেলেগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ১৯৬৬ সালে ওড়িশা ভাষায় নির্মাণ করেন ‘মাটির মনীষ’, যা কালীন্দিচরণ পাণিগ্রাহীর গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়। ১৯৬৯ এ বনফুলের কাহিনী অবলম্বনে হিন্দি ভাষায় নির্মাণ করেন ‘ভুবন সোম’। ১৯৭৭ সালে প্রেম চন্দের গল্প অবলম্বনে তেলেগু ভাষায় নির্মাণ করেন ‘ওকা উরি কথা’। ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করেন ‘জেনেসিস’, যা হিন্দি, ফরাসি ও ইংরেজি তিনটি ভাষায় তৈরি হয়।

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া