এবার করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ‘ফেলুদা’! কালজয়ী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের এই চৌকস গোয়েন্দা শনাক্ত করবে ‘কোভিড-১৯’ রোগী! কি, বিষয়টা একটু অন্যরকম শোনাচ্ছে?
হ্যাঁ, সিনেম্যাটিক ধাঁচে এ ঘটনা বাস্তবে ঘটছে ভারতে। দেশটি তৈরি করেছে পেপার বেজড টেস্ট স্ট্রিপ কিট। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফেলুদা’। যা দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটে নির্ণয় করা যাবে শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি।
নয়া দিল্লির দ্য কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ইন্টেগরিটিভ বায়োলজি (সিএসআইআর-আইজিআইবি) এটি তৈরি করেছে। এতে উদ্ভাবনী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাঙালি বংশোদ্ভূত দুই বিজ্ঞানী ড. শৌভিক মাইতি ও দেবজ্যোতি চক্রবর্তী।
এটির বিপণন ও উন্নয়নের জন্য গতকাল (৫ মে) প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে ভারতের বিখ্যাত শিল্প গ্রুপ টাটা সনস প্রাইভেট লিমিটেড। এ অনুষ্ঠানেই জানানো হয়, কিট প্রস্তুত। সবকিছু ঠিক থাকলে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ‘ফেলুদা’ মাঠে নামতে পারবে। অর্থাৎ তখন থেকে এটি করোনা শনাক্ত করার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
এই গবেষণা প্রসঙ্গে জানানো হয়, গবেষক দলটি গত দুই বছর অ্যানিমিয়ার সিকল সেলের ওপর নিরীক্ষা চালিয়েছে। আবার যখন চীনে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শুরু হয়, তখনই তারা নিরীক্ষা করা শুরু করে। জানতে চেষ্টা করে এই ভাইরাসটি কীভাবে মিউটেশন করছে। যার ফলে গত মাসেই টেস্ট কিটের কার্যকারিতা প্রমাণ করতে পারেন তারা। গত দুই মাসে তারা এটি নিয়ে দিনে ২০ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন বলে জানান। যার ফল শিগগিরই পাবেন ভারতীয়রা।
কেন ফেলুদা—এমন প্রশ্নে আইজিআইবির দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘ফেলুদা তার কাজে শতভাগ সফল। আমাদের এই কিটও তাই। এবং ফেলুদার মতোই দ্রুতগতিতে তা সম্পন্ন করে। এ কারণেই এটির এমন নামকরণ।’
প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা সত্যজিৎ রায়ের অমর সৃষ্টি। এটা বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্রও। ১৯৬৫ সালে সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস এসেছে। সত্যজিৎ নিজেও চরিত্রটি নিয়ে দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। এগুলো হলো, সোনার কেল্লা ও জয় বাবা ফেলুনাথ। এরপর তার পুত্র সন্দীপ রায় ফেলুদাকে নিয়ে নিয়মিত চলচ্চিত্র ও সিরিজ নির্মাণ করেছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস