X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১
রুবেলের স্মৃতিতে খোকন

এই নিষ্ঠুর সত্য আমি মেনে নিয়েছি

মাসুম পারভেজ রুবেল
০৪ এপ্রিল ২০১৬, ১৫:১৩আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০১৬, ১৯:০৪

শেষবিদায়ে খোকনএকসঙ্গে কাজ একাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করে নায়ক-নায়িকারা জুটিতে পরিণত হন। এটাই হয়ে আসছে। কিন্তু আমার ও শহীদুল ইসলাম খোকনের মধ্যে সম্পর্কটা ছিল নির্মাতা-নায়ক জুটি!


আমরা একসঙ্গে ২৯টি ছবি করেছি। যার সবই প্রায় ব্যবসা সফল। মানে আমাদের একসঙ্গে উপস্থিত শুধু জুটি হিসেবেই নয়, দর্শকরা আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছিল আমাদের।

খোকন আমার কাছে শুধু নির্মাতাই নয়। সে আমার বন্ধু-সহপাঠী। আমি চলচ্চিত্রে এসেছি আমার বড় ভাইয়ের (সোহেল রানা/মাসুদ পারভেজ) মাধ্যমে। প্রথম দিকে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছি গায়ক হিসেবে। এরপর কিন্তু নায়ক হিসেবে কাজ করাটা খোকনের সঙ্গেই। মূলত খোকন ছিল বড় ভাইয়ের সহযোগী পরিচালক।

পরিচালনার জন্য সেও নতুন নায়ক খুঁজছিল। তখন ভাইয়াই আমার কথা বলেন। এরপর থেকে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা। অনেকে হয়তো বলবেন শহীদুল ইসলাম খোকনের মতো নির্মাতা যুগে যুগে হয় না। আমি বলব, তার মতো পরিচালক শুধু এক যুগে নয়, ৫-৬ যুগেও আসে না।

একজন নির্মাতা হিসেবে তার সেন্স অব হিউমার অসাধারণ। ছবির বিভিন্ন সিরিয়াস দৃশ্য দর্শকদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে তিনি ছিলেন আপোষহীন। তার নির্মাণেই সেটা পাওয়া যায়। তাকে নিয়ে আজ এমন অনেক ঘটনাই মনে পড়ে। ‘দিন মজুর’ ছবির তখন দৃশ্যধারণ চলছে। একটি দৃশ্যে আমার ঘরে আগুন দেওয়া হবে। প্রস্তুতিও শেষ। হঠাৎ ছবির নায়িকা চম্পা নিষেধ করলেন।

পরিচালক খোকনকে বললেন, ‘আগুনের মধ্যে এই শট দিতে গেলে রুবেলের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি তার জীবননাশও হতে পারে। অন্য কিছু করুন।’

চম্পা নাছোড়বান্দা। তিনি একটু বেশি ভয় পাচ্ছিলেন আমাকে নিয়ে। কোনও উপায় না পেয়ে খোকন চম্পাকে অন্য ঘরে আটকে রাখার পরিকল্পনা করেন। ঠিক এভাবেই পাগলামী করে সেই কাজটি শেষ করেছিলেন খোকন।

একবার ‘বিপ্লব’ ছবির কাজ চলছে। দৃশ্যে একটা ইঁদুরকে কামড় দিতে হবে আমাকে। দৃশ্যটি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য খোকন পলিথিন পেঁচিয়ে ইঁদুরকেই কামড় দিতে বললেন। এর বাইরে তিনি বিকল্প সুযোগ দিতে নারাজ। অবশেষে তার আস্থা রাখতে আমি সত্যিই কামড় দিয়েছিলাম ইঁদুরের গায়ে। এবং সেটা পলিথিন ছাড়াই! সেই দৃশ্যের পর খোকনের সুখের হাসিটা এখনও আমার চোখে ভাসছে।

আমার ফিল্ম ক্যারিয়োরের ‌'লাকি' ছিল বন্ধু খোকন। এ দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন তার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে না। শেষের দিনগুলোতে সে এতবেশি কষ্ট পাচ্ছিল, যা বলার মতো না।

সত্যিকার অর্থে আমি তার এ কষ্ট থেকে মুক্তি চাইছিলাম। মৃত্যু তাকে সেই কষ্ট থেকে আজ মুক্তি দিয়েছে- এই নিষ্ঠুর সত্য আমি মেনে নিয়েছি।

যেখানেই থাকুক আমার বন্ধু ভালো থাকুক। এই প্রত্যাশা করি।

অনুলিখন: ওয়ালিউল মুক্তা

/এম/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!