X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমাকে পশুর মতো মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়’

বিদেশ ডেস্ক
১২ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:৩৭আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:৪১

‘আমাকে পশুর মতো মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়’ হিজাব পরায় যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াকি শহরে লাঞ্চিত হয়েছেন এক মুসলিম নারী। বাসা থেকে মসজিদে যাওয়ার সময় ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক এ হামলার শিকার হন তিনি। ওই নারী বলেন, হিজাব পরিধানের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে এক ব্যক্তি গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে এ হামলা চালায়। আমাকে পশুর মতো মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়। মনে হচ্ছিল, আজ আমি নিশ্চিতভাবেই মারা যাবো।

গত সোমবার নামাজ আদায়ের জন্য বাসা থেকে বের হয়ে এ হামলার শিকার হন ওই নারী। এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত করে হামলাকারী। এতে তার জ্যাকেট ছিঁড়ে যায়। পরনের হিজাব খুলে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে কোনও রকমে বাসায় পৌঁছালে ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

ঘটনার শিকার ওই নারী তার পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। তিনি জানান, হামলাকারী তাকে পশুর মতো মারধর করে। এ সময় সে নানা আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করে।

ওই নারীর ভাষায়, ‘সে আমাকে হিজাব খুলতে বলে। আমি প্রতিবাদ করে হিজাব না খোলার কথা বলি। এতে সে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর আমাকে পশুর মতো মারধর করতে থাকে।’

এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ইসলামিক সোসাইটি অব মিলওয়াকি’র মুনজেদ আহমেদ। তিনি বলেন, এটা একটা ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক হামলা। অবশ্যই আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে ভয়ের মধ্যে আছি। আমরা চাই আমাদের কমিউনিটির মানুষ নিরাপদে থাকুক।

‘আমাকে পশুর মতো মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়’

মুনজেদ আহমেদ বলেন, কোনও কিছু চুরি হয়নি। এটা কোনও ডাকাতি নয়। ঘটনার শিকার নারীর মূল্যবান সামগ্রী তার সঙ্গেই আছে। হামলার একমাত্র কারণ, তার পরনের হিজাব। হামলাকারী হিজাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে হিজাব পরিধানের কারণে হামলা বা বৈষম্যের শিকার হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। ২০১৬ সালে একটি ডেন্টাল ক্লিনিকে হিজাব পরিধানের কারণে এক মুসলিম নারীকে বরখাস্তের ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। ওই ক্লিনিকের কর্মকর্তারা অফিসের ‘পরিবেশ নিরপেক্ষ’ রাখতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করেন।  ভার্জিনিয়িার ফেয়ারফেক্স কাউন্টির ফেয়ার ওয়াকস ডেন্টাল কেয়ারে একজন ডেন্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন নাজাফ খান। তিনি জানান, মুসলিম হিসেবে হিজাব পরে কাজে আসার কারণেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এনবিসি ওয়াশিংটনকে নাজাফ খান বলেন, আমি খুব হতাশ। যেদিন এই ঘটনা ঘটে সেদিন আমি খুব ভেঙে পড়ি।

চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় হিজাব পরেননি নাজাফ। এমনকি নিয়োগ পাওয়ার পর প্রথম দুইদিনও অফিসে হিজাব পরেননি তিনি। কিন্তু তৃতীয় দিন থেকে তিনি হিজাব পরে অফিসে কাজ করা শুরু করেন। ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ হিসেবে তিনি হিজাব পরা শুরু করেন।

নাজাফ জানান, যেদিন তিনি হিজাব পরে অফিসে যাওয়া শুরু করেন, সেদিনই তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ড. চাক জো তাকে হিজাব খুলে ফেলতে বলেন।  জো তাকে বলেন, অফিসে তারা নিরপেক্ষ পরিবেশ বজায় রাখতে চান। কারণ হিজাব হলো ইসলামি পোশাক। যা অনেক রোগী পছন্দ করেন না। ক্লিনিককে তারা ধর্মীয় রীতির বাইরে রাখতে চান।

নাজাফ জানান, ড. জো তাকে আল্টিমেটাম দেন- যদি হিজাব পরতে হয় তাহলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। আর চাকরি করতে হলে তাকে হিজাব পরা বাদ দিতে হবে। তিনি বলেন, আমি যখন বলি যে ধর্ম নিয়ে আমি কোনও সমঝোতা করব না; তখন ড. আমার জন্য দরজা খোলা রেখে চলে যান।

সূত্র: এনবিসি, ফক্স সিক্স নিউজ মিলওয়াকি, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

/এমপি/

সম্পর্কিত
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ইসরায়েল কি যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হবে?
এ বছর পুলিৎজার পেলো ৩ সংবাদমাধ্যম
সর্বশেষ খবর
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
নির্দেশ উপেক্ষিত হলেও কৌশলে সফল আ.লীগ
উপজেলা নির্বাচননির্দেশ উপেক্ষিত হলেও কৌশলে সফল আ.লীগ
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?