X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ার শঙ্কায় ‘মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক যুদ্ধ’ ঠেকাতে তৎপর যুক্তরাষ্ট্র

বিদেশ ডেস্ক
০৬ জুন ২০১৭, ১৮:৪০আপডেট : ০৬ জুন ২০১৭, ১৯:৩৭
image


ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি বাদশাহ সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যকার চলমান কূটনৈতিক যুদ্ধ শান্ত করার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে ‍যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যের এ কূটনৈতিক যুদ্ধে যেন মার্কিন স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না হয় সেদিক বিবেচনায় নিয়ে দেশটি জোর তৎপরতা চালাবে। মার্কিন প্রশাসনের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে কাতারকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।


সোমবার (৫ জুন) জঙ্গিবাদে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় মধ্যপ্রাচ্যের ৬ দেশ। সৌদি আরব ও বাহরাইনের ধারাবাহিকতায় মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লিবিয়া এবং ইয়েমেন কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয়। ইয়েমেনে কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের আরব জোট থেকেও বাদ দেওয়া হয় কাতারকে। আর মধ্যপ্রাচ্যের ছয় দেশের আচমকা এমন সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র অবাক হয়ে গেছে বলে রয়টার্সকে জানান কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, নানা কারণেই এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মার্কিন বিমান ঘাঁটি কাতারে। এখান থেকেই সিরিয়া ও ইরাকে আইএস এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সন্ত্রাসী ঘোষিত সংগঠন হামাসকে সমর্থন দেয় কাতার। এছাড়া ১৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া তালেবানের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে দেশটির।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, ‘তালেবান কিংবা হামাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের একটি জায়গা দরকার। যেখানে তারা আলাদাও থাকবে আবার কথা বলার সুযোগও থাকবে।’



যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা জানান, তারা এখনও বুঝতে পারছেন না ঠিক কী কারণে ৬টি দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো।

তারা মনে করেন, সৌদি আরব হয়তো ট্রাম্পের দেওয়া ইরান-বিরোধী আশ্বাসে এমন কাজ করেছে। এক সাবেক কর্মকর্তা জানান, ‘আমার মনে হয় সৌদি সফরে ট্রাম্পের আশ্বাসের কারণে দেশটির হয়তো মনে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সমর্থন করবে। কিন্তু আমি জানি না তাদের জনগণ এই বিষয়টি সমর্থন করে কিনা।

অথচ, ট্রাম্প প্রশাসনের সিনিয়র এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সৌদি আরব বা মিরাত এমন পদক্ষেপ নিতে পারে তা যুক্তরাষ্ট্রের ধারণাতেও ছিল না। সোমবার হোয়াইট হাউস জানায়, মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা শান্ত করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দোহার কূটনৈতিক এলাকা
রিয়াদে ট্রাম্প সন্ত্রাসবাদ দমনে আরব ও ইসলামিক নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আর ইরানের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে সমর্থনের অভিযোগ এনেছিলেন।

কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক গঠনে পুনর্বিবেচনার জন্য নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা। মাত্র ২৫ লাখ জনসংখ্যার কাতারে প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাস রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা এমন অবস্থা স্থায়ীভাবে দেখতে চাই না। যুক্তরাষ্ট্র আরব দেশগুলোর মাঝে পরিস্থিতি শান্ত করতে একজন প্রতিনিধিও পাঠাবে।

জিসিসি বা গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলে ছয়টি ধনী আরব দেশ রয়েছে। সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন ও ওমান। এই দেশগুলোর মাঝে সম্পর্ক ঠিক করতে মার্কিন প্রতিনিধি পাঠানোর চিন্তা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা সত্যি যে কাতারের কিছু আচরণ শুধু আরব দেশগুলোর জন্যই হুমকি নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও হুমকিস্বরুপ। আমরা সবাইকে সঠিক পথে আনতে চাই।’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মারসেলে ওয়াহবা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু গোপন ও সাবধানে।

আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই সামনে এগিয়ে আসবে। তবে কিভাবে করবে? আমার মনে হয় পেছন থেকে চুপচাপ কাজ করে যাবে তারা। আমার মনে হয় না এত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তারা বসে থাকবে। কারণ এতে সমস্যা আরও প্রকট হবে।’

জঙ্গিদের সমর্থন করার নীতি মূলত কাতারের বর্তমান আমিরের বাবার করা। এর কারণেই আরব বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে কাতারের।

এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গেও কাতারের বিরোধ চলে আসছে। মিসর ও আরব দেশগুলোর অভিযোগ জঙ্গিদের সমর্থন দেয় তারা, বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডকে, যাদের রাজনৈতিক শত্রু মনে করে মিসর।

এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আরব দেশগুলোর মাঝে ঐক্য গড়ে তুলতে আমাদের সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়াইয়ে এটা গুরুত্বপূর্ণ।’

/এমএইচ/এফইউ/

সম্পর্কিত
মিসরে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনা, গাজায় বোমা ফেলছে ইসরায়েল
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা নীতিগত সিদ্ধান্ত, আইনি নয়: কাদের
সর্বশেষ খবর
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন: সেলিম মাহমুদ
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন: সেলিম মাহমুদ
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
কারা দেশ চালাবে তা দেশের মানুষ নির্ধারণ করবে: সাইফুল হক
কারা দেশ চালাবে তা দেশের মানুষ নির্ধারণ করবে: সাইফুল হক
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
রুশ বোমারু বিমান ভূপাতিতের দাবি ইউক্রেনের
রুশ বোমারু বিমান ভূপাতিতের দাবি ইউক্রেনের