রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন আসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। একইসঙ্গে শরণার্থীতে পরিণত হওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতেরও অঙ্গীকার করেছেন তারা।
গত ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই’তে বৈঠকের পর একটি বিবৃতিতে দেন আসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এতে দ্বন্দ্বের মূল কারণগুলোর সমাধানের জন্য ‘ব্যাপক ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার’ প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ যেন তাদের জীবনমানের পুনর্গঠন করতে পারে তার জন্য ‘একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি’র ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রীরা।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে আসিয়ান চেয়ারের দায়িত্ব লাভ করে থাইল্যান্ড। মন্ত্রীরা জনগণের চাহিদা মূল্যায়ন এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে মিয়ানমারে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্তও অনুমোদন দিয়েছেন। আসিয়ান কোঅর্ডিনেটিং সেন্টার ফর হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যসিসটেন্স অন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এই টিমটি গঠন করছে।
আসিয়ানের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাখাইনে মানবিক ত্রাণ কর্মসূচির জন্য আমাদের অব্যাহত সমর্থন জানাচ্ছি। একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পদ্ধতিতে তাদের প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতির প্রতি আসিয়ান অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে উত্তর রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মি’র মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে অবিলম্বে আসিয়ানের টিম পাঠানো যাবে না।
আসিয়ানের এই বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের যে আচরণ তার জন্য দেশটির কোনও সমালোচনা করা হয়নি। অথচ ইতোপূর্বে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে এক ধরনের ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ। তবে ওই গণহত্যা বা নিধনযজ্ঞের সমালোচনার পরিবর্তে মানবিক সহায়তা দেওয়ার ওপরই জোর দিয়েছে আসিয়ান।
২০১৭ সালের আগস্টে বিজিপির ফাঁড়িতে আরসা’র হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে হামলার পর পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় জাতিগত নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। সূত্র: ইউসিএ নিউজ।