ভারতের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে বাংলাদেশ থেকে সেখানে স্থায়ী হওয়া মানুষ তাদের বৈধ নাগরিক। তবে আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজেই স্বীকার করেছেন, এনআরসি থেকে বাদ পড়াদের মধ্যে এমন বহু মানুষ রয়েছেন যারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে সেখানে স্থায়ী হয়েছেন। ধারাবাহিক টুইট বার্তায় এই সিনিয়র বিজেপি নেতা অভিযোগ করেন, আইনগত নথি জালিয়াতি নিয়ে সন্দেহপোষণ করে অনেককেই বাদ দেওয়া হয়েছে।
ভারতে ‘ইলিগ্যাল মাইগ্রেন্টস ডিটারমিনেশন বাই ল’ বা আইএমডিটি নামের অবৈধ অভিবাসী সংক্রান্ত আগের যে আইনটি ছিল তাতে বলা হয়েছিল, যতক্ষণ না পর্যন্ত অবৈধ হিসেবে প্রমাণিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নাগরিকত্ব বহাল থাকবে। তবে ২০০৫ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ওই আইনের সেই ধারাটি উল্টে দিয়েছে, যার ভিত্তিতে চালু থাকা জাতীয় নাগরিকত্ব হালনাগাদ প্রকল্প এখন লাখ লাখ মানুষের ঘরছাড়া হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অবৈধ অভিবাসী সংক্রান্ত নতুন আইনে বলা হয়েছে, যাদের নাগরিকত্ব নিয়ে সরকার নিশ্চিত নয়, তাদের নিজেদেরই নাগরিকত্বের প্রমাণ হাজির করতে হবে। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হলে আসামের সব বাসিন্দাকে প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে যে তারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে সেখানে আছে।
আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় ১৯ লাখ লোক বাদ পড়ার দিনেই (৩১ আগস্ট, শনিবার) হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিউজ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘১৪-১৫ লাখ বিদেশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে তাদের এই ১৪-১৫ লাখ লোককে ফিরিয়ে নিতে বলা হবে।’ একইদিনে তিনি টুইটারে লিখেছেন, বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হিসেবে আগে আসা বহু ভারতীয় নাগরিকের নাম এনআরসি’তে স্থান পায়নি, কারণ কর্তৃপক্ষ তাদের শরণার্থী সার্টিফিকেট গ্রহণ করেনি। তথ্য জালিয়াতি করে অনেকেই তালিকায় স্থান পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
#NRCAssam
— Himanta Biswa Sarma (@himantabiswa) August 31, 2019
Names of many Indian citizens who migrated from Bangladesh as refugees prior to 1971 have not been included in the NRC because authorities refused to accept refugee certificates. Many names got included because of manipulation of legacy data as alleged by many 1/2
ভারতের ক্ষমতাসীন জোট এনডিএ’র উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অংশের সমন্বয়কারী শর্মা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের উচিত রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের আগের অনুরোধ অনুযায়ী সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর অন্তত ২০ শতাংশ ও আসামের বাকি অংশের ১০ শতাংশ নাম পুনর্মূল্যায়ন করা।
এর আগে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার দুইবার সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে ভুলভাবে এনআরসি’তে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নমুনা যাচাইয়ের অনুরোধ করে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলায় এই যাচাই কাজ করার অনুরোধ করা হয়। চলতি মাসে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন, নির্দিষ্ট প্যারামিটারের ভিত্তিতে এনআরসি পুনরায় চালুর নির্দেশ দেওয়া হবে না।