X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন সু চি?

বিদেশ ডেস্ক
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:১০আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪৬
image

রোহিঙ্গা গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। জাতিসংঘের শীর্ষ পর্যায়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মারজুকি দারুসম্যান বলেছেন; রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের পরিকল্পনায় সু চির সংশ্লিষ্টতা নাও থাকতে পারে, তবে এ ব্যাপারে অবগত হওয়ার পরও তিনি কোনও পদক্ষেপ নেননি। এজন্য সু চি’র কী ধরনের বিচার হতে পারে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এপি ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য কুইন্ট-এর এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারুসম্যানের এমন মন্তব্যের পর সু চির ওপর চাপ জোরালো হয়েছে।

বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন সু চি?

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।  হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানাবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে জাতিগত নিধন ও গণহত্যার আলামত। তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি’ও রোহিঙ্গাদের পক্ষে কোনও ইতিবাচক ভূমিকা নিতে সক্ষম হননি। বরং গণহত্যাকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন তিনি। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতেও কোনও উদ্যোগ নেননি সু চি। বরং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার কোনও অগ্রগতি না হওয়ার দায় বাংলাদেশের ওপর চাপিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয়ও অস্বীকার করে আসছেন তিনি। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত হয়েছেন এক সময়ের গণতন্ত্রপন্থী এই নেত্রী। হারিয়েছেন বহু সম্মাননা। 

সেনাবাহিনী পরিচালিত রোহিঙ্গা নিধনের  বিষয়ে সু চি কতটা জড়িত ও তার কেমন শাস্তি হতে পারে তা এক কথায় বলা সম্ভব নয় জানিয়েছেন জাতিসংঘের শীর্ষপর্যায়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মারজুকি দারুসম্যান। রোহিঙ্গা নিধনের ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের তত্ত্বাবধানে গঠিত বিশেষ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান দারুসম্যান   বলেছেন, এমন হতে পারে যে  সু চি নিধনযজ্ঞের ব্যাপারে আগে থেকে জানতেন না। তবে জানার পরও তিনি তা স্বীকার করেননি।  এজন্য তার কী শাস্তি হবে, এক কথায় সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব না। অন্যদিকে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য ক্রিস্টোফার সিদোতি বলেছেন, মিয়ানমারে বিগত ১২ মাসেও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেনি। কোথাও কোথাও আরও অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন,   যতো দিন যাবে ততোই বেসামরিক সরকারের পক্ষে দায় এড়ানো কঠিন হয়ে যাবে।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলের প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে রাখাইনে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরা হয়।  সেখানে একে গণহত্যা  আখ্যা দিয়ে বলা হয়, সেনা অভিযানে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৭ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

এক সময় যে ইউরোপ অং সান সু চিকে দক্ষিণ এশিয়ায় ‘গণতন্ত্র ও মুক্তির’ প্রতীক বলে মনে করতো, রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে নেতিবাচক ভূমিকার কারণে সেই ইউরোপ থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তিনি। নিপীড়নের ঘটনায় হস্তক্ষেপে অস্বীকৃতি ও কথিত ‘আইনের শাসন’ অনুসরণ করার অজুহাত দেওয়ায় তার উপর ক্ষুব্ধ বিশ্বনেতারা। রয়টার্স সাংবাদিকদের কারাবন্দিত্বের ঘটনায় তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও জোরালো হয়ে ওঠে।  

রাখাইনের ঘটনায় সবশেষ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দারুসম্যান। এপি ও দ্য কুইন্ট-এর যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা গণহত্যার কারণে শত শত ব্যক্তির শাস্তি হতে পারে। এর মধ্যে মিয়ানমারের বেশ কয়েকজন জেনারেলের নামও রয়েছে। অবশ্য ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন সু চির নাম বলেনি। তবে দারুসম্যানের মন্তব্যে অবশ্য বোঝা যাচ্ছে সু চির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়তে পারে। দারুসম্যান বলেন, জড়িতদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হতে পারে তাদের।

সম্প্রতি মিয়ানমরে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি-ও সু চি কে বলেছেন, ‘দয়া করে চোখ মেলে তাকান, কান দিয়ে শুনুন এবং হৃদয় দিয়ে অনুভব করুন। দয়া করে বেশি দেরী হওয়ার আগে আপনার বিবেককে ব্যবহার করুন।

 

/এমএইচ/বিএ/
সম্পর্কিত
রোহিঙ্গাদের জন্য আরও তহবিল চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা চালাতে ওআইসির সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১২ ঘণ্টার মাথায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরেক যুবককে হত্যা
সর্বশেষ খবর
সব কর্মচারীর জন্য আবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: মেয়র তাপস
সব কর্মচারীর জন্য আবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: মেয়র তাপস
উপজেলা নির্বাচন অর্থ ও সময়ের অপচয় মাত্র: সাইফুল হক
উপজেলা নির্বাচন অর্থ ও সময়ের অপচয় মাত্র: সাইফুল হক
৮ নন্দিত শিল্পীকে নিয়ে আসিফ ইকবালের ‘ঐশ্বর্য’
৮ নন্দিত শিল্পীকে নিয়ে আসিফ ইকবালের ‘ঐশ্বর্য’
ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
ছাত্রলীগ সহসভাপতি সাদ্দামের বছরে আয় ২২ লাখ, ব্যাংকে ৩২ লাখ, উপহারের স্বর্ণ ৩০ ভরি
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচনছাত্রলীগ সহসভাপতি সাদ্দামের বছরে আয় ২২ লাখ, ব্যাংকে ৩২ লাখ, উপহারের স্বর্ণ ৩০ ভরি
বৃষ্টি ও বন্যার কী পূর্বাভাস পাওয়া গেলো?
বৃষ্টি ও বন্যার কী পূর্বাভাস পাওয়া গেলো?
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল