যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফিলিপাইনের ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার (৮ কোটি ১০ লাখ ডলার) সমপরিমাণ অর্থের মধ্যে কতটুকু কোথায় গেছে তা নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। তাদের তথ্যমতে এই টাকা গেছে তিনটি স্থানে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ওই হ্যাককৃত অর্থের মধ্যে নগদ ৩০ মিলিয়ন ডলার ম্যানিলার ক্যাসিনোর সাথে জড়িত এক চীনা ব্যক্তির কাছে পাঠানো হয়। ২১ মিলিয়ন ডলার চলে যায় ইস্টার্ন হাওয়ায় ক্যাসিনোর অ্যাকাউন্টে। আর সোলেয়ার ক্যাসিনোর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় ২৯ মিলিয়ন ডলার।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বেশ কয়েকদিন ধরে চীনা বংশোদ্ভূত এক ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্রোকারের কাছে ডলার এবং পেসোর (ফিলিপাইনের মুদ্রা) অন্তত ৭ লাখ ৮০ হাজারটি ব্যাংকনোট পাঠানো হয়। ফরেন এক্সচেঞ্জ ফিলরেমের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাউতিস্তা সিনেট কমিটিকে জানিয়েছেন, তার প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক ব্রাঞ্চ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ওয়েইকাং জু এবং দুটি ক্যাসিনোকে ওই অর্থ স্থানান্তর করার জন্য। তিনি বলেন, চীনা বংশোদ্ভূত জু-কে নগদ ৩০ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়। বাউতিস্তা আরও জানান, ২১ মিলিয়ন ডলার ইস্টার্ন হাওয়ায় ক্যাসিনোর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
সোলেয়ার ক্যাসিনোর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় ২৯ মিলিয়ন ডলার, এই ক্যাসিনোটির মালিক ফিলিপাইনের ধনকুবের এনরিকে র্যাজন। সোলেয়ারের পরিচালনায় থাকা ব্লুমবেরি রিসোর্টের কর্পোরেট সচিব সিলভেরিও বেনি তান জানান, জু-এর নামে যে ২৯ মিলিয়ন ডলার তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, তা বাজির কয়েনে (চিপস) রূপান্তর করা হয়।
অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জুলিয়া বাকায় আবাদ বলেন, ‘আমাদের এই অর্থের দৌড় শেষ পর্যন্ত ক্যাসিনোতে গিয়ে থামে।’ তিনি জানান, তার সংস্থা এফবিআই-কে সহযোগিতার জন্য এই মামলার সাথে জড়িত ৪৪টি অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে।
উল্লেখ্য, হ্যাকারদের একটি গ্রুপ চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ চুরি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোড ব্যবহার করেই এই অর্থ চুরি করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম এবং সুইফট কোড কন্ট্রোলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ৩০টি পেমেন্ট অ্যাডভাইজ পাঠায় ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের জন্য। এর মধ্যে ৪টি অ্যাডভাইজ অনার করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। যার মাধ্যমে মোট ৮১ মিলিয়ন ডলার (৮ কোটি ১০ লাখ ডলার) ফিলিপাইনে সফলভাবে পাচার করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। সূত্র: রয়টার্স।
/এসএ/বিএ/