রুশ ক্রমিক হত্যাকারী অ্যালেক্স্যান্ডার পিচুশকিন ২০০৭ সাল থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে ৪৮টি হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এত বছর বাদে এসে তিনি আরও ১১টি হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হয়েছেন। রুশ পেনাল সার্ভিসের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রুশ পেনাল সার্ভিসের পক্ষ থেকে শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আরও ১১ জন নারী ও পুরুষকে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন পিচুশকিন।
তদন্তকারীদের সবসময়ই সন্দেহ ছিল, পিচুশকিনের বিরুদ্ধে যে কয়টি অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, আদতে তার চেয়েও বেশি হত্যা করেছেন তিনি।
পিচুশকিনের বর্তমান বয়স ৫০। ১৯৯২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন তিনি। মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলে বিটসেভস্কি পার্ক ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মদ্যপ ও বৃদ্ধ ব্যক্তিরা ছিল তার শিকার।
রুশ সংবাদমাধ্যম তার নাম দিয়েছিল দাবার বোর্ড হত্যাকারী (চেসবোর্ড কিলার)। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া জবানবন্দীর কিছু বক্তব্যের ভিত্তিতে তার এই নামকরণ হয়। পিচুশকিন বলেছিলেন, নিহত প্রতি ব্যক্তির জন্য একটি করে পয়সা দিয়ে দাবার বোর্ডের ৬৪ ঘর সাজানোর ইচ্ছা ছিল তার।
বিকৃত এই খায়েশ পূরণের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন পিচুশকিন। আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদানকালে এই ক্রমিক হত্যাকারী দাবি করেন, ৬৩ জন মানুষকে তিনি হত্যা করেছেন। তবে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ৪৮টি হত্যাকাণ্ড ও তিনটি হত্যাপ্রচেষ্টার অভিযোগে রায় প্রদান করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই পোলার আউল প্রিজনে অবরুদ্ধ রয়েছেন পিচুশকিন। রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে দুর্গম আর্কটিকে এই কারাগার অবস্থিত।
স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পিচুশকিনের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তিনি হবেন সংখ্যার বিচারে রাশিয়ার ইতিহাসে নথিভুক্ত দ্বিতীয় ভয়ংকরতম ক্রমিক হত্যাকারী। দেশটিতে নথিভুক্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের হন্তারক হচ্ছেন এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মিখাইল পোপকোভ। তার বিরুদ্ধে ৭৮ জনকে হত্যার অভিযোগ ছিল।