গাজায় ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েল। এখন হামাসের সিদ্ধান্তের জন্য চলছে অপেক্ষা। শুক্রবার (৩০ মে) ওই পরিকল্পনা যাচাই করে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম সপ্তাহে জীবিত বা মৃত ২৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলের জিম্মায় থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১২৫ জন জীবিত ফিলিস্তিনির মুক্তি এবং ১৮০ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ওই পরিকল্পনায় আরও বলা হয়, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে হামাস স্বাক্ষর করা মাত্রই গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র ক্যারোলিন লিয়াভিট বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দিয়েছে ইসরায়েল। এরপর এটি হামাসের কাছে পাঠানো হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইসরায়েল স্বাক্ষর করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ সেটা হামাসের কাছে পেশ করেছেন বলে নিশ্চিত করেন লিয়াভিট। অবশ্য, হামাস ওই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে- তখন পর্যন্ত এমন কোনও খবর তার কাছে ছিল না।
সংবাদ সম্মেলনের লিয়াভিট গতকাল বলেছিলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে সব জিম্মিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা যাবে বলে আমরা আশাবাদী। আলোচনা এখনও চলমান আছে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষরের বিষয়ে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে রয়টার্সকে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত শুক্রবার বা শনিবার জানানো হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করার কথা বলে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। গত জানুয়ারির ১৯ তারিখ দু পক্ষের মধ্যে একটা সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলেও মার্চে তা ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই আবারও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পূর্বশর্ত নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে চরম মতবিরোধ চলছে।
ইসরায়েলের দাবি, শাসক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে হবে এবং অবশিষ্ট সব জিম্মিকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এগুলো পূরণ হলেই কেবল যুদ্ধাবসানের বিষয়ে আলোচনায় যাবে তারা।
তাদের দাবি বিরোধিতা করে হামাস বলেছে, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের পুরোপুরি সমাপ্তি ছাড়া কোনও শর্ত তারা মানবে না।