সিরিয়া ও লেবাননের সঙ্গে দীর্ঘদিনের শত্রুতা কমিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ইসরায়েল। সোমবার (৩০ জুন) জেরুজালেমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের অত্যাবশ্যকীয় এবং নিরাপত্তাজনিত স্বার্থ বজায় রেখে শান্তি ও স্বাভাবিকীকরণ অক্ষে নতুন দেশের অংশগ্রহণ দেখতে আমরা আগ্রহী। এজন্য সিরিয়া ও লেবাননের মতো দেশের সঙ্গে আমরা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাই। তবে গোলান মালভূমি আমাদের দখলেই থাকবে।
এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে সিরিয়ার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, গোলান মালভূমি আমাদের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
গাজার দুই বছরব্যাপী যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে চলছে অস্থিরতা। এর মধ্যেই লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর ওপর হামলা এবং সিরিয়ায় ইরান-ঘনিষ্ঠ নেতা বাশার আল-আসাদের পতন ঘটিয়েছে ইসরায়েল।
সাম্প্রতিক ইরানের সঙ্গে সংঘাতে দেশটির অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে দাবি করে ইসরায়েলি নেতারা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার এখন অনুকূল সময়।
১৯৯৪ সালে জর্ডান এবং ১৯৭৯ সালে মিসরের পর ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। তবে এসব স্বীকৃতি আরব দুনিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়নি।
ওই সিরীয় কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ প্রক্রিয়া ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের ধারা মেনে হতে হবে।
২০০২ সালের ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গোলান মালভূমি, পশ্চিম তীর ও গাজাসহ দখলকৃত অঞ্চল থেকে সরে আসে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে দেয়, তাহলে আরব দেশগুলো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে।
এদিকে সৌদি আরবও বারবার বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের অগ্রগতি ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয়।
তবে সৌদি আরবের শর্তে আপত্তি জানিয়ে সার বলেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের পূর্ব শর্ত হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনকে দাঁড় করানো গঠনমূলক নয়। চলতি বছরের মে মাসে রয়টার্স জানায়, সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছে ইসরায়েল। দুদেশের সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে তাদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
অন্যদিকে, এই সময়ই, তিন বছর আগে সিরিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান জানান।