যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ অনুদান সুনির্দিষ্ট ও সীমিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার (১ জুলাই) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্থাটির অনুদান প্রদান বন্ধ করা হবে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তিনি বলেছেন, যে-সব দেশ নিজেদেরকেই সহায়তা করার সদিচ্ছা ও সক্ষমতা দেখিয়েছে, আমরা তাদের পাশে থাকব। আমরা সেসব খাতেই বরাদ্দ দেব, যা তাদের নিজেদের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে এবং বেসরকারি খাতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানসহ বৈশ্বিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে।
তিনি আরও বলেন, ইউএসএআইডি এখন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘দানভিত্তিক মডেল’ থেকে সরে গিয়ে এমন কৌশল গ্রহণ করছে যা দেশগুলোকে টেকসইভাবে বিকাশ লাভে সহায়তা করবে।
নতুন কাঠামোতে সহায়তার চেয়ে বাণিজ্য বেশি গুরুত্ব পাবে এবং বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতা নিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক অনুদানের কোটি কোটি ডলারের তহবিল প্রথমে স্থগিত করে পরে একবারে বাতিল করে দেয়। প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে সর্বাগ্রে রেখে করদাতাদের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তহবিল বাতিলের কারণে ইউএসএআইডি কার্যত বন্ধ হয়ে যায় এবং সংস্থাটির হাজার হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীর চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ে। পাশাপাশি জরুরি খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে এবং বৈশ্বিক মানবিক কার্যক্রম মারাত্মক অনিশ্চয়তায় পড়ে।
দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, মার্কিন অনুদান বন্ধ হওয়ার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নাও হতে পারে।
মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও সেবামূলক সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে ইউএসএআইডি।
রয়টার্স মঙ্গলবার জানিয়েছে, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সহিংসতা বৃদ্ধির পর সেখানে ধর্ষণের শিকার নারীদের জন্য জরুরি সহায়তা কিট সরবরাহে একটি বড় চুক্তি বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে হাজার হাজার নারী জীবনরক্ষাকারী ওষুধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে।