X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

এবার মানুষের ডিম্বাণু ও শুক্রাণুতে প্লাস্টিক কণার উপস্থিতির দাবি বিজ্ঞানীদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৭ জুলাই ২০২৫, ১৭:৩৬আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১৭:৩৬

আমাদের খাদ্য ও পানি দূষিত করার পর এখন মানবদেহের জনন অঙ্গেরও ক্ষতি করছে প্লাস্টিক কণা। হিউম্যান রিপ্রডাকশন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, মানববীর্য ও ডিম্বাণুর ফলিকুলার তরলেও প্লাস্টিক কণার খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।

প্যারিসে গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) আয়োজিত ইউরোপীয় সোসাইটি অব হিউম্যান রিপ্রোডাকশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজির ৪১তম বার্ষিক সম্মেলনে ওই গবেষণার সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। অবশ্য এটি এখনও পিয়ার রিভিউড হয়নি।

২৫ জন নারী এবং ১৮ জন পুরুষের ছোট একটি দলের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, ৫৫ শতাংশ বীর্য এবং ৬৯ শতাংশ ফলিকুলার তরলের (ডিম্বাণুকে ঘিরে রাখা তরল) নমুনায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

মাইক্রোপ্লাস্টিক হচ্ছে অতিসূক্ষ্ম পলিমার কণা, যার আকার এক মাইক্রোমিটার থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ওই পেপারের প্রধান গবেষক ড. এমিলিও গোমেজ সানচেজ বলেছেন, আগের একাধিক গবেষণায় মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতির ধারণা পাওয়া গেছে। তাই এই ফলাফল আমাদের জন্য অপ্রত্যাশিত না হলেও এর ব্যাপ্তি ছিল আশঙ্কাজনক।

এর আগের কিছু গবেষণায়, মানবদেহের ফুসফুস, প্ল্যাসেন্টা, মস্তিষ্ক, পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ এমনকি মলের মধ্যেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের নমুনা খুঁজে পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। 
সানচেজ আরও বলেন, সাধারণত খাদ্য, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং সরাসরি ত্বকের মাধ্যমে মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে বলে আমাদের ধারণা। এরপর সেখান থেকে রক্ত পরিবহনতন্ত্রে মিশে গিয়ে পুরো দেহ, এমনকি জনন অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে।

এসব মাইক্রোপ্লাস্টিক সরাসরি দেহে কোনও বিষক্রিয়া তৈরি করে, এমন কোনও প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন সানচেজ। তবে, প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের প্রভাবে মানবদেহের হরমোন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটা বা ক্যান্সারের মতো ভয়াবহতার দিকে ঠেলে নেওয়ার আশঙ্কা কখনও উড়িয়ে দেননি বিজ্ঞানীরা।

মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ থেকে ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় উভয় পর্যায়েই পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যক্তিগত স্তরে করণীয়ের মধ্যে রয়েছে, প্লাস্টিক বোতলের পানি খাওয়া কমানো; প্লাস্টিক পাত্রে খাবার গরম না করা; কাচ, ইস্পাত বা বাঁশের পাত্রে খাবার সংরক্ষণ; প্লাস্টিক কাটিং বোর্ড পরিহার;অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া কমানো ইত্যাদি।

তবে, এই সমস্যার কার্যকর সমাধানে ব্যক্তিগত পর্যায়ের চেয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ বেশি জরুরি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. ফিলিপ ল্যান্ড্রিগান বলেন, গত ৭৫ বছরে বিশ্বে প্লাস্টিক উৎপাদন ২৫০ গুণ বেড়েছে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে এটি আবার তিনগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জাতিসংঘের গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তিতে বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক উৎপাদনে সীমা নির্ধারণ জরুরি।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

/এসকে/
সম্পর্কিত
কেনিয়ায় গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলি
রুশ হামলায় ইউক্রেনে নিহত ৪, আহত অর্ধশতাধিক
মিয়ানমারে সংঘাত, সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামে হাজারো মানুষ
সর্বশেষ খবর
‘বিচার-সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজপথে নেমেছি’
সিরাজগঞ্জের পথসভায় নাহিদ ইসলাম‘বিচার-সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজপথে নেমেছি’
নারী ফুটবল দলকে ৫০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
নারী ফুটবল দলকে ৫০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
কেনিয়ায় গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলি
কেনিয়ায় গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলি
জরুরি আইন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না করার বিষয়ে একমত দলগুলো: আলী রীয়াজ
জরুরি আইন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না করার বিষয়ে একমত দলগুলো: আলী রীয়াজ
সর্বাধিক পঠিত
প্রসিকিউশন গণহত্যার দালিলিক প্রমাণ দিতে পারেনি: শেখ হাসিনার স্টেট ডিফেন্স
প্রসিকিউশন গণহত্যার দালিলিক প্রমাণ দিতে পারেনি: শেখ হাসিনার স্টেট ডিফেন্স
বাংলাদেশে নিজের অনেক ভক্ত জানার পর যা বললেন কেট উইন্সলেট
বাংলাদেশে নিজের অনেক ভক্ত জানার পর যা বললেন কেট উইন্সলেট
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না কেন
নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না কেন
আসন্ন নির্বাচনে এগিয়ে বিএনপি, দ্বিতীয় জামায়াত: সানেমের জরিপ
আসন্ন নির্বাচনে এগিয়ে বিএনপি, দ্বিতীয় জামায়াত: সানেমের জরিপ