চীনা কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে ঘিরে নির্মিত একটি মোবাইল গেম নিষিদ্ধ করেছে হংকং। গেমটি ডাউনলোড বা শেয়ার করলে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক প্রকাশনা রাখার অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
‘রিভার্সড ফ্রন্ট: বনফায়ার’ নামের গেমটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, খেলোয়াড়েরা এতে তাইওয়ান, হংকং, মঙ্গোলিয়া, তিব্বত কিংবা উইঘুর জনগোষ্ঠীর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে কমিউনিস্ট সরকার উৎখাতে অংশ নিতে পারে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গেমটি ডাউনলোড করা ব্যক্তিদের রাষ্ট্রদ্রোহমূলক উদ্দেশ্যসম্পন্ন প্রকাশনার অধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে।
২০১৯ সালে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পর বেইজিং হংকংয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। এরই ধারাবাহিকতায় এ ধরনের গেম নিষিদ্ধ করাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের অংশ হিসেবে দেখছেন সমালোচকেরা।
গেমটির ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, এতে চীনের প্রকৃত সংস্থা, নীতি বা জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে সাদৃশ্য ইচ্ছাকৃতভাবেই রাখা হয়েছে। তবে গেমটিতে খেলোয়াড়েরা চাইলেই কমিউনিস্ট বিপ্লবের পক্ষেও খেলতে পারে।
পুলিশ আরও বলেছে, যারা গেমটি ইতোমধ্যে ডাউনলোড করেছেন তারা যেন তা অবিলম্বে মুছে ফেলেন এবং আইন লঙ্ঘনের চেষ্টা না করেন।
অ্যাপটি এপ্রিল মাসে চালু হলেও এখন আর হংকংয়ের গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে এটি পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে নিষেধাজ্ঞার ফলে গেমটির প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেছে। বুধবার হংকংয়ের গুগলে এটি ছিল সবচেয়ে বেশি খোঁজ করা শব্দ। গেম নির্মাতারা এক পোস্টে লিখেছেন, পুরো হংকং এখন এই গেমটির কথা জেনে গেছে।
২০২০ সালে হংকংয়ে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে চীন। এতে বিচ্ছিন্নতা, রাষ্ট্রদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ ও বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে শাস্তির বিধান রাখা হয়। এর আওতায় সংবাদমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জিমি লাই ও কর্মী জোশুয়া ওয়াংসহ বহু গণতন্ত্রপন্থিকে গ্রেফতার বা কারাবন্দি করা হয়েছে।
‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির আওতায় চীন হংকংকে ৫০ বছর পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সমালোচকদের মতে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যত সেই নীতিকে লঙ্ঘন করছে। তবে বেইজিং ও হংকং কর্তৃপক্ষ বলছে, এই আইন ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে।