সৌদি আরবে রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে সব পক্ষকে ছাড় দিতে হবে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৈঠক শেষে বলেন, আজ একটি দীর্ঘ ও কঠিন পথের প্রথম ধাপ, তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুততম সময়ে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আলোচনার লক্ষ্য একটি ন্যায্য, স্থায়ী ও টেকসই সমাধানে পৌঁছানো।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলে থাকা হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শীর্ষ বৈঠকের তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এই বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি চলছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, আলোচনায় ইউক্রেনের ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে। বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূমি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই প্রচেষ্টা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও রুবিও বলেছেন, এই আলোচনার লক্ষ্য এমন একটি চুক্তি করা, যা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। এতে ইউক্রেন, ইউরোপীয় মিত্ররা এবং রাশিয়াও অন্তর্ভুক্ত।
এই প্রেক্ষাপটে রিয়াদে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে নতুন মাত্রা যোগ করলেও সব পক্ষের সম্মতি নিশ্চিত করা কতটা সহজ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইতোমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনও চুক্তি মেনে নেওয়া হবে না।
এই আলোচনা চলাকালে রাশিয়া ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ না দেওয়াই যথেষ্ট নয়, ২০০৮ সালের বুখারেস্ট শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে ন্যাটোকে সরে আসতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ অর্জনের সম্ভাবনা বাস্তবসম্মত নয়। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিকল্প পথ খুঁজে বের করতে হবে।