ইংল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলীয় একটি রয়্যাল এয়ার ফোর্স (আরএএফ) ঘাঁটিতে ঢুকে দুটি সামরিক বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করার দাবি করেছে ফিলিস্তিনপন্থি একটি আন্দোলনকারী দল। যুক্তরাজ্যের গাজা যুদ্ধের প্রতি সমর্থনের প্রতিবাদে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের প্রচারাভিযান দলটি জানায়, তাদের দুই সদস্য অক্সফোর্ডশায়ারের আরএএফ ব্রাইজ নর্টন ঘাঁটিতে ঢুকে ‘ভয়েজার’ নামের দুটি বিমানকে রঙ ছিটিয়ে ও রড দিয়ে আঘাত করে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ইসরায়েল সরকারের নিন্দা করলেও ব্রিটেন এখনও সামরিক কার্গো পাঠাচ্ছে, গাজার ওপর নজরদারি বিমান চালাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলোকে জ্বালানি সরবরাহ করছে।
তাদের অভিযোগ, ব্রিটেন শুধু সহযোগী নয়, গাজায় গণহত্যা ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধাপরাধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।
এক্স (সাবেক টুইটার)–এ পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, স্কুটারে চড়ে দুই ব্যক্তি ঘাঁটির ভেতরে প্রবেশ করেন। এর পর একজন আগুন নেভানোর যন্ত্র ব্যবহার করে দুটি বিমানের ইঞ্জিনে লাল রঙ ছিটিয়ে দেন।
তাদের দাবি, এই রঙ ফিলিস্তিনিদের রক্তপাতের প্রতীক। রানওয়ে জুড়ে লাল রঙ ছিটানো হয় এবং একটি ফিলিস্তিন পতাকাও রেখে যান তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, তারা কোনও বাধার সম্মুখীন হননি এবং গ্রেফতার এড়িয়ে ঘাঁটি থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হন।
ঘটনাটিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক নাশকতা’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, এটি জাতির সেবায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি অবমাননা।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সেনাবাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক এবং তারা নিজের জীবনকে বিপন্ন করে নাগরিকদের রক্ষা করে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এমন হামলা আমাদের সেনাদের সাহস ও আত্মত্যাগকে অবমাননা। যারা আমাদের রক্ষা করে, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।
পুলিশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগেও চলতি মাসে লন্ডনে পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনপন্থিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দাবি করেছিল।
ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট আর্মস ট্রেড নামের একটি সংগঠন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সাময়িক অস্ত্র স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পরেও যুক্তরাজ্য ইসরায়েলকে সামরিক সরঞ্জামের লাইসেন্স দেওয়া বাড়িয়েছে।
এমনকি, সরকার মার্কিন তৈরি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহ স্থগিত করতেও অস্বীকৃতি জানায়। যুক্তি হিসেবে তারা বলেছে, এতে করে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর ‘গভীর প্রভাব’ পড়তে পারে।