করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবিত হলেও এখনই তা পাবেন না বিশ্ববাসী। বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের শীর্ষ কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা সতর্ক করে জানিয়েছেন, পুরো বিশ্বের জন্য পর্যাপ্ত করোনা টিকা তৈরি করতে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ অপেক্ষা করতে হবে অন্তত চার বা পাঁচ বছর। সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন তিনি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা-প্রতিষেধক কোভিশিল্ডের পাশাপাশি নোভাভ্যাক্সসহ পাঁচটি আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে ইতোমধ্যে চুক্তি রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউটের। রাশিয়ার তৈরি প্রতিষেধক ‘স্পুটনিক-ভি’ তৈরিতেও সিরামের নাম সামনে আসছে। তবে সেই চুক্তি এখন সম্পন্ন না হলেও ১ কোটি প্রতিষেধক তৈরির লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে তাদের। এরমধ্যে ৫০ শতাংশই ভারতের বাজারে ছাড়া হবে বলে আগেই জানিয়েছে সিরাম।
আদর পুনাওয়ালার দাবি, সারা বিশ্বের কোভিড রোগীর কাছে প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর। তারা উৎপাদন ক্ষমতা এত দ্রুতও বাড়়িয়ে তুলতে পারেনি, যাতে বিশ্বের সব কোভিড রোগীর কাছে প্রতিষেধক স্বল্প সময়ে পৌঁছে যেতে পারে। বিশ্বের সবার কাছে টিকা পৌঁছাতে অন্তত চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে।
ব্যাখ্যা করে আদর পুনাওয়ালা জানান, হামের মতো কোভিড-১৯-এর সংক্রমণের হাত থেকে মুক্তি পেতে অন্তত দু’টি ডোজের প্রয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বের কোভিড রোগীদের জন্য অন্তত ১ হাজার ৫০০ কোটি ডোজ প্রতিষেধক প্রয়োজন। তবে সবার জন্য তা বোধহয় চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের গোড়ায় পাওয়া সম্ভব নয়।
তবে কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রনেতাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা যে অসম্ভব তা মনে করিয়ে দিয়েছেন আদর পুনাওয়ালা। তিনি মনে করেন, প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সমান্তরালভাবে চলছে না ওষুধ প্রস্তুতকারীর সংস্থাগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা। তিনি বলেন, আমি জানি, গোটা বিশ্বই প্রতিষেধক নিয়ে আশাবাদী। তবে এমন কোথাও তো এখনও শুনিনি যে কেউ এটি উৎপাদন করার মতো অবস্থার কাছাকাছিও আসতে পেরেছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।