মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কলকাতার খিদিরপুরের ঐতিহাসিক বাড়ি হস্তান্তর আটকে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘মধুসূদন দত্তের বাড়ি হস্তান্তর করা হচ্ছিল, আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে তা আটকে দিয়েছি। প্রোমোটিং করতে দেওয়া হবে না। শেষ পর্যন্ত একটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দিতে হবে, যাতে এই বাড়িটি পুনরুদ্ধার করা যায়।’
ঐতিহাসিক তথ্যানুসারে, বিদেশ যাওয়ার আগে মধুসূদন খিদিরপুরের ২০বি, কার্ল মার্কস সরণির (পূর্বতন গার্ডেনরিচ রোড) এই বাড়িটি বন্ধু কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই হরিমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিক্রি করে দেন। বর্তমানে বাড়িটি কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ কমিটির ‘গ্রেড ২এ’ তালিকাভুক্ত ভবন হিসেবে চিহ্নিত। এই স্থাপত্য রক্ষায় কলকাতা পুরসভা ইতোমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
এছাড়াও, হেরিটেজ কমিটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্প-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যাতে মধুসূদন কীভাবে এবং কখন বাড়িটি বিক্রি করেন, তার প্রামাণ্য তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এ বিষয়ে সাহিত্য পরিষদ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছে পুরসভা।
সাহিত্য পরিষদের ২০০৬ সালের মার্চ সংখ্যার একটি নিবন্ধ অনুযায়ী, খিদিরপুরের ২০ নম্বর কার্ল মার্কস সরণির এই বাড়িটি প্রথমে রামনারায়ণ বসু হস্তান্তর করেন রাজনারায়ণ দত্তের কাছে। ১৮৩৭ সালে রাজনারায়ণ তার পুত্র মধুসূদনকে নিয়ে এই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। মধুসূদন এখান থেকেই হিন্দু কলেজে যাতায়াত করতেন। পরে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে তিনি পিতৃগৃহ ত্যাগ করেন এবং বিদেশ যাওয়ার আগে এই বাড়ি বিক্রি করে দেন।
মেয়র বলেছেন, ‘মধুসূদন দত্ত দীর্ঘদিন যে বাড়িতে বসবাস করেছিলেন, তা চিহ্নিত করার দায়িত্ব দিয়েছি হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত পুরসভা মধুকবির এই ঐতিহাসিক বাড়িটি পুনরুদ্ধার করতে পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।’