X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন সেই জাহাজের মালিক

বিদেশ ডেস্ক
২৪ মে ২০২১, ১০:৩৭আপডেট : ২৪ মে ২০২১, ১০:৩৭

বিশ্বের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক নৌপথ মিসরের সুয়েজ খালে সম্প্রতি আটকে পড়া সেই মালবাহী জাহাজের মালিক এবার দুর্ঘটনার জন্য সুয়েজ কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। ৯১৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের দাবিতে বর্তমানে জাহাজটি আটকে রেখেছে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ। তবে শিপটির জাপানি মালিক শোয়েই কিসেনের আইনজীবীরা মিসরীয় আদালতকে জানিয়েছেন, সুয়েজ ক্যানাল অথরিটির গাফিলতির কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল।

আইনজীবীরা বলছেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে দানবাকৃতির জাহাজটিকে খালে প্রবেশ করতে দেওয়াটাই চরম ভুল ছিল। এমনকি শিপটি খালে আটকে যাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ সেটির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি খুঁজে বের করতে পারেনি।

এভার গিভেনের আইনজীবী আবু আলী জানিয়েছেন, জাহাজটিকে আটকে রাখার ক্ষতিপূরণ বাবদ সেটির মালিকও এক লাখ ডলার দাবি করেছেন।

এ ব্যাপারে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সুয়েজ ক্যানাল অথরিটির কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পৃথকভাবে তারা নিজেদের কোনও ভুলের কথা অস্বীকার করেছে।

বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের এই পথটিতে এভার গিভেন নামের ওই জাহাজটি প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে আড়াআড়িভাবে আটকে ছিল। গত ২১ মার্চ মিসরের মরুভূমিতে যে ঝড় হয়েছিল সেই ঝড়ের প্রবল বাতাস আর খালের পানিতে জোয়ারের চাপে ৪০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজটি তার যাত্রাপথ থেকে সরে যায়। ঘুরে গিয়ে এটি আড়াআড়িভাবে খালের পথ আটকে ফেলে।

প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০টি জাহাজ বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই নৌপথটি ব্যবহার করে। কিন্তু এই ঘটনার পর সুয়েজ খালের দুই মুখে তৈরি হয় বিশাল যানজট। ফলে এ রুটে চলাচলকারী অন্যান্য জাহাজকে ভিন্ন পথ ব্যবহার করতে হয়।

খালটির তদারকি করে সুয়েজ ক্যানেল অথরিটি। এভার গিভেন-কে মুক্ত করতে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা প্রথমে ব্যবহার করেন টাগ-বোট। জাহাজ থেকে মোটা মোটা রশি ফেলে টাগ-বোট দিয়ে টেনে জাহাজটির মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করা হয়।

টাগ-বোটগুলো যখন দানবাকৃতির এই জাহাজটিকে ঠেলে সরাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল তখন আনা হয় মাটি খোঁড়ার ডিগার ও ড্রেজার। ডিগার দিয়ে জাহাজের যে অংশটি তীরে ঠেকে গিয়েছিল সেই জায়গার মাটি কেটে ফেলা হয়। আর ড্রেজার দিয়ে জাহাজের তলা এবং আশেপাশের কাদা ও বালি সরিয়ে ফেলা হয়।

ম্যারিটাইম বিশেষজ্ঞ স্যাল মার্কোগ্লিয়ানো বলছেন, এই ধরনের ড্রেজার সুয়েজ খালে হরদম ব্যবহার করা হয়। এদের কাজ খালের নাব্যতা বজায় রাখা। তিনি বলেন, ‘ড্রেজারগুলো থেকে লম্বা পাইপগুলো পানির তলায় গিয়ে মূলত কাদা আর বালি তুলে বাইরে ফেলে দেয়।’

মিসরের অর্থনীতি সুয়েজ খালের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। করোনা মহামারির আগে দেশটির জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ আসতো সুয়েজ খাল থেকে পাওয়া মাশুল থেকে।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাল বন্ধ থাকায় তাদের প্রতিদিন গড়ে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার লোকসান হয়েছে। অন্যদিকে, লয়েডস লিস্টে প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, শত শত মালভর্তি জাহাজ আটকে থাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯৬০ কোটি ডলারের ব্যবসা বন্ধ ছিল।

টাগ-বোট আর ড্রেজার ব্যবহার করেই শেষ পর্যন্ত এভার গিভেনকে মুক্ত করা হয়। এটা ব্যর্থ হলে তৃতীয় একটি উপায়ও বিবেচনার মধ্যে ছিল। তা হলো সব মালামাল ও জ্বালানি তেল সরিয়ে ফেলে জাহাজটিকে হালকা করে ফেলা। তবে শেষ পর্যন্ত ওই বিকল্পের পথে হাঁটতে হয়নি কর্তৃপক্ষকে। টাগ-বোট আর ড্রেজার ব্যবহার করেই জাহাজটিকে পানিতে ভাসাতে সমর্থ হয় তারা। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।

/এমপি/
সম্পর্কিত
কেনিয়ায় বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮১
চুক্তি হোক বা না হোক রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযান চলবে: নেতানিয়াহু
ক্যানারি দ্বীপে নৌকাডুবি, ৫০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
সর্বশেষ খবর
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস