৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের ইসরায়েল আক্রমণ করে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস, যা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের সূত্রপাত করে। এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে গোষ্ঠীটির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েল। তার মাথার ওপর ঝুলছে খড়গ। গাজায় চলমান হামলায় সিনওয়ারকে হত্যা করা এখন ইসরায়েলের অন্যতম লক্ষ্য।
তবে গাজায় চলমান যুদ্ধ সাত মাস পেরোলেও ইসরায়েলের ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন সিনওয়ার। তাকে এখনও হত্যা করতে না পারাটা এই যুদ্ধে ইসরায়েলের ব্যর্থতারই প্রকাশ। গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও হামাসের এই শীর্ষ নেতার চুল পরিমাণ ক্ষতিও করতে পারেনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এমনকি, অক্টোবরের হামলার সময় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে জিম্মি হওয়া ইসরায়েলিদের মুক্ত করতেও ব্যর্থ হয়েছে তারা।
ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করতে চাওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য তার সঙ্গেই পরোক্ষ আলোচনায় যেতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েল। হামাস, ইসরায়েল ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, সিনওয়ার শুধু একজন দৃঢ়চেতা কমান্ডারই নন, বরং একজন কৌশলী আলোচকও। গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যেই আলোচনার টেবিলে বসে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের গাজা বিজয় অর্জন থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
সিনওয়ার এবং কৌশলগত আলোচনার বিষয়ে সংবেদনশীল গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্ত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তার মতে, মিসর ও কাতারে যুদ্ধবিরতির ও জিম্মি মুক্তির আলোচনা শুরু হওয়ার সময় সিনওয়ার গাজার ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন। ওই সময় যেকোনও বিষয়ে ইসরায়েলকে ছাড় দেওয়ার আগে সিনওয়ারের অনুমতির নিতে হতো হামাসের আলোচকদের।
তবে হামাসের কর্মকর্তারা জানান, গোষ্ঠীটির যেকোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিনওয়ারের কথাই চূড়ান্ত নয়। হামাসের মিত্র ও শত্রুদের মতে, কৌশলগতভাবে পুরো হামাসের ওপর সিনওয়ারের একক কর্তৃত্ব নেই। তবে তার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বপরায়ণ ব্যক্তিত্ব হামাসের কার্যকলাপে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
হামাসের এক সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সালাহ আল-দ্বীন আল-আওদেহ। ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে ইসরায়েলের কারাগারে থাকাকালীন সিনওয়ারের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। সিনওয়ার সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেই যা সিনওয়ারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া নেয় হামাস।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিনওয়ার কোনও সাধারণ নেতা নন। তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং পরিকল্পনাকারী। তথাকথিত কোনও ম্যানেজার বা ডিরেক্টরও নন, তিনি আসলেই একজন নেতা।’
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সিনওয়ারের নাম খুব কম শোনা গেছে। যেমনটা শোনা গেছে গাজার বাইরে থাকা ইসমাইল হানিয়েহর মতো হামাস কর্মকর্তাদের। হানিয়েহ হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা।
হানিয়েহর চেয়ে একজন জুনিয়র নেতা সিনওয়ার। মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, পর্দার আড়াল থেকে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বিষয়ে হামাসের নেওয়া সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তিনি।
কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের মতে, সিনওয়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থেকে থেকে অনেক আলোচনাই মন্থর হয়ে গিয়েছিল।
মার্কিন কর্মকর্তা ও হামাস সদস্যদের মতে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় যোগাযোগে ব্যবহৃত হওয়া অনেক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে সিনওয়ারের কাছে কোনও বার্তা পৌঁছাতে কখনও একদিন পর্যন্তও সময় লেগেছে এবং সেই বার্তার জবাব পেতে সময় লেগেছে আরও একদিন।
গত সপ্তাহে কায়রোতে একটি যুদ্ধবিরতির আলোচনা আবারও স্থগিত হয়েছে। ইসরায়েলি ও পশ্চিমা কর্মকর্তাদের কাছে এই আলোচনায় সিনওয়ার একজন নৃশংস প্রতিপক্ষ এবং একজন দক্ষ রাজনৈতিক অপারেটর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন, যিনি ইসরায়েলি সমাজকে বিশ্লেষণ করতে এবং সেই অনুযায়ী তার নীতিগুলো মানিয়ে নিতে পারদর্শী।
৭ অক্টোবরের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে সিনওয়ার এমন একটি কৌশল অবলম্বন করেছেন, যেটি ইসরায়েলিদের হিংস্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে প্রভাবিত করছে। তবে হামাসের হিসাব মতে, এই সংঘাতে অসংখ্য ফিলিস্তিনির মৃত্যু ইসরায়েলের সঙ্গে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। গাঢাকা দেওয়ার জন্য হামাসের সদস্যদের মতো তাদের সুড়ঙ্গে প্রবেশের অধিকার ছিল না।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সিনওয়ারকে কয়েক মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন, সিনওয়ারের কাছে ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার এবং দেশটিকে দুর্বল করে দেওয়ার বাসনাটাই মুখ্য। তারা বলছেন, ফিলিস্তিনিদের কল্যাণ বা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এক্ষেত্রে তার কাছে গৌণ।
ইসরায়েলি সমাজ সম্পর্কে ধারণা
১৯৬২ সালে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের একটি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন সিনওয়ার। ইসরায়েলের কারণে ১৯৪৮ সালের নাকবা বা বিপর্যয়ের সময় অন্যান্য ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পালিয়ে এসে ওই শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল তার পরিবার।
১৯৮৯ সালের ইসরায়েলি কোর্ট রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯৮০ সালে হামাসে যোগদান করেন সিনওয়ার। পরে ইসরায়েলের জন্য কাজ করা ফিলিস্তিনিদের হত্যার দায়ে কারাবাস করেন তিনি। ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর গিলাদ শালিত নামে হামাসের হাতে জিম্মি এক ইসরায়েলি সেনার বিনিময়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েল, যাদের মধ্যে সিনওয়ারও ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার আগে, দুই দশকেরও বেশি সময় ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিজীবন কাটান সিনওয়ার।
সিনওয়ারের সাবেক কয়েদি সহকর্মী ও ইসরায়েলি কর্মকর্তা, যারা তাকে কারাগারে পর্যবেক্ষণ করেছেন তারা বলেন, কারাগারে থাকাকালীন কঠোরভাবে শৃঙ্খল জীবনযাপন করেন তিনি। হিব্রু ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে ও পড়তে শেখেন এবং ইসরায়েলি সমাজ ও সংস্কৃতিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, সেই রপ্ত করা জ্ঞান যুদ্ধবিরতি আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এসে ইসরায়েলি সমাজে বিভাজনের বীজ বপন করা ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি চাপ বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করছেন সিনওয়ার।
তারা বিশ্বাস করেন, কিছু ইসরায়েলি জিম্মিদের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের সময়টাও সিনওয়ারই নির্ধারণ করেছিলেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এসব ভিডিও প্রকাশ করে নেতানিয়াহুর ওপর জনগণের ক্ষোভ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
কিছু ইসরায়েলি তো অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসের দাবি করা একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও মেনে নিতে রাজি। আর সে জন্য সরকারকে চাপও দিচ্ছেন তারা। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগাতে চাইছেন সিনওয়ার। তবে নেতানিয়াহু এই যুদ্ধের শেষ না দেখা পর্যন্ত থামছেন না। হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার যে পণ তিনি নিয়েছেন, তা থেকে এক চুলও নড়বেন না তিনি। এছাড়া, এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেতানিয়াহুকে তার ডানিপন্থি মিত্ররাও বেশ চাপ দিচ্ছে। হামাসকে ধ্বংস না করে এই যুদ্ধ শেষ করলে পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছেন তারা।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যদি যুদ্ধকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে থাকে তবে সেই একই অভিযোগ রয়েছে সিনওয়ারের বিরুদ্ধেও।
ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সিনওয়ারের কৌশল হলো আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের সম্মান ক্ষুণ্ন এবং দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধকে চলতে দেওয়া।
রাফাহ শহরে হামলা না চালানোর জন্য ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে রবিবার রাফাহ শহর থেকে কাছাকাছি একটি বর্ডারে রকেট ছুড়েছে হামাস। এতে ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত হন।
এটি যদি হামাসের দাবার চাল হয় তবে এর পাল্টা চালও রয়েছে। গত সপ্তাহেই রাফাহতে একটি অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হুমকি উপেক্ষা করেই এই অভিযান শুরু করেছে দেশটি। রাফাহতে বড় ধরনের কোনও হামলা হলে ইসরায়েলের জন্য মার্কিন নীতি পরিবর্তনের হুমকি দিয়েছিলেন বাইডেন। এছাড়া, দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, খুব সম্ভবত উত্তর গাজার খান ইউনিসের সুড়ঙ্গগুলোতে গাঢাকা দিয়ে আছেন সিনওয়ার।
ঐক্যের ভাবমূর্তি
ফিলিস্তিনিদের দুর্দশাকে সিনওয়ার বা হামাস নিজ স্বার্থে ব্যবহার করছে—এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস এবং এর মিত্ররা।
রাফাহতে হামাসের এক প্রবীণ নেতা আহমেদ ইউসুফ বলেছেন, ‘হামাসের মূল লক্ষ্য হলো এখনই যুদ্ধ বন্ধ করা। এই গণহত্যা এবং ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধ করা।’
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, গাজার বাইরে থাকা হামাস সহকর্মীদের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করেছেন সিনওয়ার। ৭ অক্টোবরের ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে তাদের কিছুই জানাননি তিনি। সিনওয়ারই হামাস পরিচালিত এই সামরিক কর্মকাণ্ডের অনুমতি দিয়েছিলেন বলেও বিশ্বাস করেন ওই কর্মকর্তারা। তবে এই হামলায় সিনওয়ারের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সন্দিহান।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে পরিচিত একজন জ্যেষ্ঠ পশ্চিমা কর্মকর্তা মনে করেন, সিনওয়ার তার ভাই মুহাম্মদের সঙ্গে মিলে সিদ্ধান্ত নেন। মুহাম্মদ হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক নেতা। যুদ্ধ চলাকালীন মাঝে মাঝে গাজার বাইরে থাকা কিছু হামাস নেতার সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়েছেন তিনি।
ওই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিষয়ে বাইরের থাকা নেতৃবৃন্দ মাঝে মাঝে আপস করতে চাইলেও ইসরায়েলি আলোচকদের কাছে নতি স্বীকার করতে চাননি সিনওয়ার। কেননা, তিনি ভালো করেই জানেন, যুদ্ধ শেষ হোক বা না হোক, তাকে হত্যা করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এমনকি আলোচকরা যদি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেও যান, তবু সিনওয়ারকে বাকি জীবন তাড়া করে বেড়াবে ইসরায়েল।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিনওয়ারের ব্যক্তিগত ভূমিকাকে একপাশে রেখে ঐক্যের একটি চিত্র তুলে ধরেছেন হামাসের সদস্যরা। হামাসের নির্বাচিত নেতৃত্ব সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণ করে এমন ভাবমূর্তিই ধরে রেখেছেন তারা।
কাতারে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক বলেন, অনেকেই বলে থাকেন এই যুদ্ধে সিনওয়ার যদি বড় কোনও ভূমিকা পালন করেই থাকেন তবে সেটি নিজের ক্ষমতার জন্য, হামাসের নেতা হিসেবে গাজায় সিনওয়ারের কথাই চূড়ান্ত না হলেও বেশ প্রভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সিনওয়ারের কথার মূল্য অনেক বেশি। কেননা, তিনি যুদ্ধের ময়দানে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’
তবে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে হানিয়েহর সিদ্ধান্তই ‘শেষ কথা’ বলেও জানিয়েছেন আবু মারজুক। তিনি বলেন, হামাসের সব রাজনৈতিক নেতা ‘একটি মতে’ বিশ্বাস করেন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য হানিয়েহর সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সিনওয়ারের কয়েদি বন্ধু আল ওয়েদার মতে, এরপরও সিনওয়ারের কর্তৃত্ববাদী ব্যক্তিত্ব নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা থেকেই যায়। তিনি বলেন, ‘তার জায়গায় অন্য কেউ হলে, সবকিছু আরও ধীর ও সুষ্ঠুভাবে চলতে পারতো।’
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সিনওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অক্টোবরের পর থেকে জনসম্মুখে খুব কমই এসেছেন এই নেতা। মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, জিম্মিদের সঙ্গে লুকিয়ে আছেন সিনওয়ার। তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি পাওয়া এক ইসরায়েলি জিম্মি থাকাকালীন সিনওয়ারের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা বলেছিলেন।
ফেব্রুয়ারিতে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তারা বলেছিল, গাজায় হামাসের সুড়ঙ্গের সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে এই ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন দেশটির সেনারা। ওই ভিডিওতে এক নারী ও শিশুকে নিয়ে এক পুরুষকে তাড়াহুড়ো করে সুড়ঙ্গ দিয়ে নামতে দেখা গেছে।
সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, ওই ব্যক্তি সিনওয়ার ছিলেন। তিনি তার পরিবার নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ইসরায়েলি সেনাদের এমন দাবি যাচাই করা অসম্ভব। কেননা, ক্যামেরাতে ওই পুরুষের মুখ দেখা যায়নি।
সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস