ইরানের রাজধানী তেহরানে দুদিন আগে নিহত হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহর জানাজা শুক্রবার (২ আগস্ট) কাতারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতারের রাজধানী দোহার উত্তরে একটি বড় মসজিদে অনুষ্ঠিত এই জানাজায় হামাসের নতুন নেতা হিসেবে প্রস্তাবিত খালেদ মেশালসহ হামাসের অন্যান্য শীর্ষ নেতা এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি উপস্থিত ছিলেন। হানিয়েহকে দোহার উত্তরের লুসেইল শহরের একটি কবরস্থানে দাফন করা হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
হানিয়েহর কফিন ফিলিস্তিনের পতাকা দিয়ে ঢাকা ছিল। কফিনটি জানাজায় উপস্থিত শত শত মানুষের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। একই হামলায় নিহত হওয়া তার দেহরক্ষীর কফিনও সেখানে রাখা হয়েছিল।
হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি জানাজার সময় রয়টার্সকে বলেন, আমাদের বার্তা হলো, তুমি মাটির গভীরে ডুবছো এবং তোমার শেষ কাছাকাছি চলে এসেছে। হানিয়েহর রক্ত সব হিসাব বদলে দেবে।
হানিয়েহকে তেহরানে একটি রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় সরাসরি আঘাত করে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছেন হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা খালিল আল-হাইয়া। ইরান ও হামাস উভয়েই ইসরায়েলকে এই হত্যার জন্য দায়ী করেছে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। ইসরায়েল হত্যার দায় স্বীকার বা অস্বীকার করেনি।
এই হত্যাকাণ্ডটি এমন একাধিক হামলার মধ্যে একটি, যা হামাস বা লেবাননের হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে। এতে গাজার যুদ্ধ একটি আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা লোহিত সাগর থেকে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, হানিয়েহর হত্যাকাণ্ড গাজা যুদ্ধের মধ্যে আন্তর্জাতিক স্থগিতাদেশের প্রচেষ্টার জন্য সহায়ক নয়। কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র শান্তি প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। মধ্যস্থতায় কাতার সামনের সারিতে রয়েছে।
হানিয়েহর স্ত্রী আমাল হানিয়েহ বৃহস্পতিবার ইরানে তার স্বামীর জানাজায় অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজার সব শহীদের সালাম জানাই, নেতাদের সালাম জানাই।
হামাসের পলিটব্যুরো সদস্য ইজ্জাত আল-রিশক বিশ্বের সব মসজিদে হানিয়েহর আত্মার জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, গত মাসে তাদের একটি বিমান হামলায় গাজায় হামাসের সামরিক নেতা মোহাম্মদ দেইফকে হত্যা করা হয়েছে। হামাস দেইফের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি।
হিজবুল্লাহ বুধবার নিশ্চিত করেছে যে তাদের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুক্র ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার হিজবুল্লাহ বলেছেন, শুক্রের হত্যার "নিশ্চিত" প্রতিশোধ নেওয়া হবে এবং তাদের শতাব্দী পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।