যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে ‘বর্ণবাদী মানসিকতার ফল’ এবং ইরান ও মুসলিমদের প্রতি গভীর শত্রুতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তেহরান। শনিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রবাসী ইরানি বিষয়ক দফতরের প্রধান আলিরেজা হাশেমি-রাজা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতাবাদী ও বর্ণবাদী মানসিকতার আধিপত্যের পরিচায়ক। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আলিরেজা হাশেমি-রাজা বলেন, এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী মহলে ইরানিদের এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি দীর্ঘস্থায়ী বিদ্বেষ রয়েছে।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ১৯টি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশের মানুষ এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। আগামী সোমবার থেকে এই নীতি কার্যকর হবে।
এই নিষেধাজ্ঞায় ইরান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের নাম রয়েছে। আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সময় ট্রাম্প বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় আমি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছি।
এ নিয়ে আলিরেজা হাশেমি-রাজা বলেছেন, জাতিসংঘ স্বীকৃত আন্তর্জাতিক আইনি মানদণ্ডের পরিপন্থি এই নিষেধাজ্ঞা কেবল জাতীয়তা বা ধর্মের ভিত্তিতে কোটি কোটি মানুষকে চলাফেরার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে এর জন্য ‘দায়বদ্ধ’ বলে উল্লেখ করেন, যদিও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
১৯৮০ সালে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবু ২০২০ সালের তথ্যমতে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাসী ইরানি জনগোষ্ঠী এখনও যুক্তরাষ্ট্রেই বসবাস করছে—সংখ্যাটি প্রায় ১৫ লাখ।