ইরান ও ইসরায়েল শনিবার (১৪ জুন) রাতভর একে অন্যের ওপর নতুন করে হামলা চালিয়েছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। বরং এই সংঘাত সহজেই শেষ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তবে তিনি তেহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, তারা যেন কোনও মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না হানে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আজ রাতে ইরানে যে হামলা হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা ছিল না।’
এদিকে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ‘তাদের পাল্টা হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে সহায়তা করলে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র রাষ্ট্রগুলোকেও চড়া মূল্য দিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি ইরান আমাদের যেকোনো ধরনের আক্রমণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণ শক্তি এমনভাবে নেমে আসবে—যা আগে কখনও দেখা যায়নি।’
তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরও বলেন, আমরা সহজেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি চুক্তি করিয়ে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারি!!!’
তবে ট্রাম্প কোনও সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি।
ইরানের হামলার পর ইসরায়েলি উদ্ধারকারী দলগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত আবাসিক ভবনের ধ্বংসস্তূপে সারারাত ধরে টর্চলাইট ও স্নিফার ডগ ব্যবহার করে জীবিতদের খোঁজ করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের পারমাণবিক চুল্লির আশপাশে বসবাসরতদের সরে যেতে বলেছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের আক্রমণগুলো আসন্ন প্রতিক্রিয়ার তুলনায় কিছুই না।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির দাবি, এসব হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে এবং ইরান কেবল আত্মরক্ষার্থেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নির্ধারিত ওমানে অনুষ্ঠাতব্য পারমাণবিক আলোচনা নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যেই ইসরায়েলি হামলাগুলো চালানো হয়েছে।
আর ইসরায়েল বলেছে, তাদের সামরিক অভিযানের লক্ষ্য হলো ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির হাত থেকে রোধ করা এবং তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা ধ্বংস করা। তারা স্বীকার করেছে, কেবল সামরিক হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে থামাতে পারবে না। তবে তারা আশা করছে, এই হামলা একটি পূর্ণাঙ্গ যুক্তরাষ্ট্র-ইরান চুক্তির পথ সুগম করবে।
অবশ্য আরাঘচি আগেই বলেছিলেন, যদি ইরান ইসরায়েলের এই ‘বর্বরোচিত’ হামলার শিকার হতে থাকে, তাহলে কোনও আলোচনা সম্ভব নয়। এরই মধ্যে রবিবারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পারমাণবিক আলোচনা বাতিল করেছে ইরান।