গাজার মধ্যাঞ্চলের নেৎজারিম করিডোরে মানবিক ত্রাণ নেওয়ার জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৩৫ জন নিহত। শুক্রবার আল-আওদা হাসপাতাল সূত্রে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার একইদিনে দেইর আল বালাহ শহরের পশ্চিমাঞ্চলে একটি বাড়িতে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। এতে আরও অন্তত ৮ জন নিহত ও অনেকে আহত হন। গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল জানিয়েছে, শুধু শুক্রবারই ইসরায়েলি হামলায় মোট ৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
মানবিক সহায়তা গ্রহণ করতে গিয়ে গত ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন শত শত মানুষ।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত সংগঠন গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে থাকলেও তারা নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজায় এখন মানবসৃষ্ট খরা দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে শিশুদের মৃত্যু শুরুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফ মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেন, গাজার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এখন মাত্র ৪০ শতাংশ বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন কেন্দ্র সচল রয়েছে। শিশুরা খুব শিগগিরই তৃষ্ণায় মরতে শুরু করবে।
তিনি আরও জানান, গাজা সফরে থাকা অবস্থায় তিনি দেখেছেন যে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে নারী ও শিশুরা কীভাবে আহত হচ্ছেন। এক কিশোর ট্যাংকের গোলায় আহত হয়ে পরে মারা গেছে বলেও জানান তিনি।
জেমস এল্ডার বলেন, সহায়তা কেন্দ্র কখন খোলা বা বন্ধ, সে বিষয়ে সঠিক তথ্যের ঘাটতি থেকেই বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, কখনও বলা হচ্ছে সহায়তা কেন্দ্র খোলা, পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হচ্ছে বন্ধ। কিন্তু তখন গাজার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। ফলে মানুষ তথ্য জানতে পারে না।
গাজার সরকারি সংবাদমাধ্যম কার্যালয়ের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-থাওবাতা বৃহস্পতিবার জানান, এখন পর্যন্ত মানবিক সহায়তার আশায় আসা ৪০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩ হাজার ২০৩ জন।
এমন অভিযোগের বিপরীতে জিএইচএফ দাবি করেছে, তারা তিনটি সহায়তা কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৩০ লাখ খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে কোনও ঘটনা ছাড়া।