যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরান শিগগিরই মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে। তবে কূটনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে এই সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা চলছে। সোমবার দুই মার্কিন কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ইরানের পক্ষ থেকে আগামী এক থেকে দুই দিনের মধ্যে হামলা চালানো হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি এই মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। রবিবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন বাহিনীর ওপর সম্ভাব্য হামলা চালানোর জন্য ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার মোতায়েন করছে।
এক কর্মকর্তা বলেছেন, পেন্টাগন এই অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর একটি বিশ্বাসযোগ্য হুমকি পর্যবেক্ষণ করছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন, কোনও ধরনের প্রতিশোধ নেওয়া হলে তা মারাত্মকভাবে মোকাবিলা করা হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান যদি কোনও প্রতিশোধ নেয়, তাহলে আগের হামলার চেয়েও কয়েক গুণ শক্তিশালী জবাব দেওয়া হবে।
মার্কিন যৌথ বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল ড্যান কেইন রবিবার বলেছেন, ইরাক ও সিরিয়াসহ পুরো অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। তাদের অনেকেই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ পরিচালনা করেন। এগুলো শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে। তবে তাদের অবস্থানও হামলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
গত সপ্তাহে রয়টার্স জানিয়েছিল, পেন্টাগন ইরানের সম্ভাব্য হামলা থেকে রক্ষা পেতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে কিছু যু্দ্ধবিমান ও জাহাজ সরিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে কাতারের রাজধানী দোহার বাইরে আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি থেকে বিমানগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় এই মার্কিন ঘাঁটিতে প্রায় ১০ হাজার সেনা অবস্থান করে।
ইরান নিজেকে রক্ষা ও প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত কোনও মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করেনি বা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ তেল সরবরাহ বন্ধ করতে চায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতেই ইরান এই সতর্কতা অবলম্বন করছে।