X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

আইসিসি'র তদন্তের উদ্যোগ সেনাবাহিনীর মর্যাদায় আঘাত: মিয়ানমার

বিদেশ ডেস্ক
২৯ জুন ২০১৯, ১১:৩৯আপডেট : ২৯ জুন ২০১৯, ১২:৪০

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটরদের তদন্তের উদ্যোগ প্রত্যাখান করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার দেশটির সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন অভ্যন্তরীণ তদন্তের প্রসঙ্গ তুলে ধরে দাবি করেছেন, নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আইসিসির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের উদ্যোগ মিয়ানমার ও সে দেশের সেনাবাহিনীর মর্যাদায় আঘাতের সামিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। মিয়ানমারের সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন

মিয়ানমার সেই মুষ্টিমেয় দেশগুলোর একটি, যারা আইসিসি সনদে স্বাক্ষর করেনি। তাই সরাসরি মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই। এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই তারা আইসিসির বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে। এক প্রসিকিউটরের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে আইসিসির তিন বিচারক বিশিষ্ট প্রি-ট্রায়াল কোর্ট বিচারের পক্ষে রায় দেন। আদালত বলেছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব।

বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ফাতহু বেনসুদা জানান, মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন তারা। এই তদন্ত শুরু করতে সংস্থাটির বিচারকদের কাছে আবেদন করার কথা জানান তিনি। তবে কখন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটরের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের সেনা মুখপাত্র ফরাসি বার্তা সংস্থা এফপিকে বলেন, 'সেনাবাহিনী এবং এই ইস্যুকে অবহেলা করেনি। আর নিপীড়নে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে'। সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন বলেন, এই ঘটনা দেখভালে মিয়ানমারের একটি তদন্ত কমিটি রয়েছে। আর তাদের (আইসিসি) উচিত আমরা যা করছি তাকে সম্মান দেখানো। তিনি দাবি করেন, আইসিসি'র হস্তক্ষেপ মিয়ানমার ও সেনাবাহিনীর মর্যাদার ক্ষতি করছে।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনও সেখানে থেকে গেছে। জাতিসংঘ এই সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দেয়।

রাখাইনে সেনা অভিযানে কোনও অন্যায় করার কথা অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী। তাদের দাবি রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর বৈধ অভিযান চালিয়েছে তারা। তবে এই অভিযানের সময়ে সংগঠিত অপরাধের বিচারের পক্ষে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রায় দেয় আইসিসি।

আন্তর্জাতিক বিচার কমিশনের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক ফেডেরিক রাওসাকি আইসিসি'র তদন্তের উদ্যোগকে যথাযথ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধের বিচার নিশ্চিতে পুরোপুরি অনীহা এবং অযোগ্যতা প্রমাণ করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

/জেজে/বিএ/
সম্পর্কিত
সমলিঙ্গের বিয়ে অনুমোদনের পথে থাইল্যান্ড
মস্কোয় কনসার্টে হামলা: প্রশ্নের মুখে রুশ গোয়েন্দা সংস্থা
সুপেয় পানির অপচয়, বেঙ্গালুরুতে ২২ পরিবারকে জরিমানা
সর্বশেষ খবর
রেলের প্রতিটি টিকিটের জন্য গড়ে হিট পড়েছে ৫ শতাধিক
রেলের প্রতিটি টিকিটের জন্য গড়ে হিট পড়েছে ৫ শতাধিক
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
সর্বাধিক পঠিত
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেল লাইনের ওপর থেকে ক্যাবল সরানোর অনুরোধ
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেল লাইনের ওপর থেকে ক্যাবল সরানোর অনুরোধ